শনিবার, ৭ অক্টোবর, ২০২৩

"সুলেমান হুররামের সংসার''


Disclaimer :
বিশেষ দ্রষ্ট এই গল্পের সমস্ত চরিত্র কাল্পনিক। বাস্তবের সাথে এর কোন মিল নেই, কেউ যদি মিল খুঁজে পান তাহলে তা অনিচ্ছাকৃত এবং কাকতালীয় ঘটনা মাত্র!

 পর্ব ১ - "সুলেমান হুররামের সংসার
লেখকঃ মোঃশরীফুল ইসলাম শান্ত

একটা ছেলে ছিল যার নাম সুলেমান এবং একটা মেয়ে নাম তার হুররাম।তাদের দুজনের জীবন তাদের মতন করে চলেছিল।ছেলেটি রাজধানীতে বসবাস করতো আর মেয়েটি একটি গ্রামে। ছেলেটি পড়ালেখায় ভালো ছিল এবং ক্লাসে শিক্ষকদের প্রশংসার পাত্র ছিল আর বাবা মায়ের কাছেও খুব আদরের ছিল তবে মায়ের হাতে মার খেতো বেশ তার দুষ্টুমির কারনে।
আর মেয়েটির জীবনও এই যুগের প্রায় মেয়েদের মতন ছিল তবে মেয়েটি তার স্কুল কলেজের জীবনটা ছিল ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে জগন্যতম,মেয়েটির বাবা মা বা অন্য কেউ তেমন শাসন করতেন না এইসব নিয়ে।
হুররামের এক নিকট আত্বীয়ের বাসা রাজধানীতে সে রাজধানীতে বেড়াতে আসে তখন সুলেমানের নজরে আসে কারন সুলেমানদের বাড়ির পাশে হুররামের আত্বীয় আয়েশা খালার বাসা।
সুলেমানের জন্য তখন তার বাবা মা পাত্রী খোঁজছিলো এবং অনেক প্রস্তাব তার বাবা মা দেওয়ার পরও সুলেমান না বলে দিতো তাই সামনের দিকে আগাতো না।
হুররামের কথা সুলেমান তার মা কে জানায়।সুলেমানের মা তার বাবার সাথে আলাপ করে ছেলের পচ্ছন্দ তাই মেয়ের সাথে কথা বলে এক রাত্রিতে তাদের বাসার পাশে দেখার পর।
তারপর হুররামের খালুর সাথে কথা বলে তারপর মেয়েটি সুলেমানের পরিবার দেখতে যায় এবং মেয়ে পক্ষের সবাই রাজি হয়, তখন সুলেমানের শর্ত সরূপ মেয়ে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়বে আর ইসলামি অনুশাসন মেনে চলবে সেই কথা নেওয়া হয় এবং সুলেমানের বাবা মা তাদের পরিবারে সুলেমানের মা কঠোর পরিশ্রম করতেন বাসার কাজে তাকে সহযোগীতা করতে বলা হয়,সবাই এবং মেয়ে রাজি হয়।
তারপর একদিন সুলেমানকে হুররাম বলে তারা এক সাথে লেকের পাশে ঘুরতে যাবে সেদিন ছিল তাদের এনগেজমেন্ট তারা ঘুরে আসার পর মেয়ে খালার বাসায় এনগেজমেন্ট হয়।
তারপর সুলেমানের বড় ভাইয়ের বিবাহ বার্ষিকিতে হুররামের পরিবার সুলেমানদের বাসায় আসে সেদিন ছিল হুররামের প্রথম পর্দাপন সুলেমানদের বাসায়।
তারপর বিবাহের দিনক্ষণ ঠিক হয় কিন্তু যখন সুলেমানদের বাসা থেকে বিবাহের জন্য হুররামদের বাসায় সকল কিছু পাঠানো হয় তার ভেতর সুলেমানের ভাবির লেহেঙ্গা পাঠানো হয়।তা তারা বুঝতে পেরে আর তাদের মন মতন জিনিসপত্র না হওয়াতে হুররামের মামা খালা খালু আর তার মা বিয়েটা বন্ধ করে দেয় এবং হুররামকে নিয়ে গ্রামে চলে যায়।গ্রামে যাওয়ার দিন সুলেমান জীবনের প্রথম সে কেনো নারীর জন্য কেঁদেছিল আসরের নামাজে সিজদারত অবস্থায়।সন্ধ্যায় যখন বাসায় আসে তখন মেয়ের সাথে যোগাযোগ থাকে মেয়ে সুলেমানকে শান্তনা দিতে থাকে যে সব ঠিক হয়ে যাবে এবং হুররাম সুলেমানের বাবা মায়ের সাথে কথা বলে এবং হুররামাকে সুলেমানের বাবা মা অনেক বোঝায় এবং বলে মা তোর কিছু লাগবে না তুই শুধু চলে আয় তাহলে চলবে তখন হুররাম বলে গ্রামে দাদার সাথে কথা বলে সব ঠিক করে আবার চলে আসবে।
তখন হুররামের পরিবারের কেউ বিয়েতে রাজি ছিল না তখনও হুররাম সুলেমানকে শান্তনা দিয়ে রাখে যেন সুলেমান না ভেঙ্গে পড়ে।
তারপর আবার সব ঠিক হলো এবার সুলেমান নিজের জমানো লক্ষ খানেক টাকা তার বাবা হাতে তুলে দেয় যেন কিছুর কমতি না সাজানি কেনাতে থাকে আর সুলেমানের মা স্বর্ণের লেকলেস বালা দেয় হুররামকে।
বৃহস্পতিবারে তার খালার বাসায় হলুদের আয়োজন হয় সেখানে আনন্দঘন মুহূর্ত কাটিয়েছিল সবাই।
তারপর শুক্রবার মসজিদে সুলেমান আর হুররামের ৫ লক্ষ টাকা কাবিন ও ১.৫ লক্ষ টাকা উশুলে বিয়ে হয়।
তারপরের দিন অনেক ধুমধাম করে কমিউনিটি সেন্টারে হুররাম এবং সুলেমানের বিয়ে হলো।
বিয়ের দিনেও ঝামেলা হয় এবং সুলেমানকে বিয়ের স্টেজে উঠতে দিচ্ছিলো না তার খালু ও খালা তারপর হুররামের দাদা সব পরিস্থিতি ঠিক করে।
অনেক ধুমধাম ক্যামেরা ম্যান আলোর ছড়াছড়ি কিছুর কমতি ছিল না শেষে অসুস্থ হয়ে পড়ে হুররাম তারপর তাকে সুলেমানদের বাড়িতে নিয়ে আসা হয় সেখানে সুলেমানের ভাবি তার মেঝো দেবরের জন্য সাজিয়েছিলো কিছুক্ষণ দুষ্টুমির পর তারা প্রবেশ করে।সুলেমান তার এশার সালাত ও শুকরিয়া নামাজ পড়ে তার উভয় গল্প করে ঘুমায়।

পর্ব ২ - সুলেমান হুররামের সংসার

লেখক-মোঃশরীফুল ইসলাম শান্ত


অতঃপর তাদের সংসার প্রথম কয়দিন ভালো যাচ্ছিল।তাদের মাঝে অনেক খুনসুটি ছিল।তবুও সুলেমানের মন কোথাও জানি ভার হয়ে থাকতো কিছু ব্যাপার নিয়ে কিন্তু সে তার নতুন স্ত্রীকে অনেক বেশি ভালোবাসে।একটি শুক্রবার বিদায় নেয় সেই শুক্রবার সুলেমান ক্লান্ত ছিল তাই বাসায় স্ত্রীর সাথে থাকে।
কিন্তু স্ত্রী এই নিয়ে সুলেমানের নামে হুররাম তার নিজের মায়ের কাছে বলে যে ঘুরতে নিয়ে যায়নি, তারপর এই নিয়ে তার মা সুলেমানকে বলে এতে সুলেমান মনে কষ্ট পায়।বিয়ের কিছু দিন পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ে সুলেমানের মনে অসন্তোষ দেখা দেয় তারপর সুলেমান নিচে ঘুমায় কারন তখন হুররাম একজনের সাথে বার্তা আদান প্রদান করছিলো। হুররাম অপর পাশের যে বালককে ম্যাসেজ দিচ্ছিল তার নাম রতন। রতনের সাথে কয়েকমাস আগে তার পরিচয়,সে বিয়ের পরও তার সাথে কথোপকথন করতে তার ভালো লাগতো।তবে সুলেমান তা বুঝতে পেরে সহজভাবে নেয়নি প্রথমবারের মতন আইডি তার মোবাইলে সংযুক্ত করে।
তাদের মাঝে ঝগড়া ছিল মূলত এইসব নিয়ে সুলেমান চাইতো সর্বদা হুররাম ইসলাম মেনে চলুক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ুক।আর নারীদের ইসলামের যাওয়ার সহজ পথের হাদীনটি অনুসরন করতে বলে তা ছিল ঠিক এমন,বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে নারী দুনিয়াতে ৪টি কাজ যথাযথভাবে আদায় করবে, সে নারীর জন্য জান্নাতের ৮টি দরজাই খোলা থাকবে। কাজ ৪টি হলো-
- পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়বে।- রমজানের রোজা রাখবে।- স্বামীর আনুগত্য করবে। এবং- লজ্জাস্থানের হেফাজত করবে।
একদিন আয়েশা খালার বাসায় বেড়াতে যায় তখন ওয়াশরুমে যেয়ে দুইটি মিনিট রতনের সাথে কথোপকথন করে হুররামের মোবাইলে।
বিষয়টি তাদের বিয়ের পনেরতম দিনে খিচুড়ি রেঁধেছিল হুররাম তার স্বামী সুলেমানের জন্য তখন তারা খিচুড়ি খায় সবকিছু ঠিকঠাক তবে যখন হুররামের মোবাইলে দেখতে পারে সেই রতনের সাথে কথা বলে তখন সুলেমান হুররামের সিম কার্ড দুইটি ভেঙ্গে ফেলে।
তারপর হুররাম কেঁদে বাসা থেকে বের হয়ে যায় তারপর তার খালাকে সব কিছু বলে খালা শান্তনা দেয় এবং হুররামের মা সুলেমানদের বাড়িতে হুররামকে বুঝিয়ে নিয়ে আসে।
হুররামের মা সুলেমানকে জিজ্ঞাসা করলেও সুলেমান লজ্জাতে কিছুই বলতে পারেনি।
দেখতে দেখতে তাদের বিয়ের প্রথম মাস অতিবাহিত তাদের প্রতিটা সময় তারা স্মরণীয় করে রাখতো তাদের মতন করে।
হুররাম ভালোবাসায় কমতি রাখতো না, সুলেমানও হুররামের ভালোবাসা কয়েকগুণ করে ফেরত দিতো।
একদিন হুররামের স্কুল ও কলেজ জীবনেন বান্ধুবী গৌধুলীর সাথে সুলেমানের মোবাইলে কথা হয়,তখন সুলেমান বাকপটু ছিলো তাই গৌধুলী থেকে হুররামের জীবনের সব কথা জানতে চায় এবং হুররামের চালচলনে অনেক কিছু আগে থেকে জানা ছিল তা কিছু বলাতে গৌধুলী সুলেমানকে হুররামের সব কথা বলে দেয়।
গৌধুলী বলেছিল,হুররাম বিয়ের আগে তার জীবনটা ছিল স্বাধীনতা প্রিয়,সে কাউরো বারং মানতো না।হুররাম তার নবম শ্রেণী থেকে কলেজ জীবন পর্যন্ত কয়েকজনের সাথে সম্পর্কে জড়ায়।তার স্কুল জীবনে গোপন ছবি ভাইরাল হয়।তারপর কিছুদিন পর পর সে তার বয়ফ্রেন্ড পরিবর্তন করতো।তার বয়ফ্রেন্ডের হাতে হুররাম প্রায়শই মার খেতো যখন বয়ফ্রেন্ডের কোনো কথা শুনতো না।এভাবে এসএসসি পরিক্ষার সময় হুররাম পরিক্ষা দিতে চাচ্ছিল না এক বয়ফ্রেন্ডের সাথে ব্রেকআপের শোকে পড়ে স্কুলে হুররামের মা এসে বয়ফ্রেন্ডের সাথে সব ঠিক করে দেয় হুররামের মা।
যাবতীয় জিনিস খুলে বলে গৌধুলী, সুলেমানকে এবং প্রমানও দেয় সামাজিক গণমাধ্যমে যতটুক ছিল।

তারপর সেভাবে সুলেমান সত্যতা পাওয়ার পর সামাজিক গণ মাধ্যম ডিলেট করে দেয়। তারপর তার খালা ও মা দ্বারা সুপারিশ করায় কিন্তু সুলেমান অবাক হয় তার মা এবং খালা হুররামের অবৈধ সম্পর্কে সমর্থন দেওয়াতে।

তারপর থেকে কিছু না কিছু নিয়ে হুররাম তার মা দ্বারা সুলেমানকে প্রেসারে রাখতো, সুলেমানের জীবনটা মানসিক অশান্তির মাঝে থাকতে তার সাথে হুররামকে যখন সুলেমান বোঝাতো তখন সুলেমানের গায়ে হুররাম হাত পর্যন্ত তুলতো।
এইসব নিয়ে সুলেমান সিজদাতে যেয়ে কান্না করতো।
হুররাম ক্ষমা চাহিতো তার ভুল বোঝার পর তারপরও সে আবার একই ভুল করতো স্বামী গায়ে হাত তুলতো।
হুররাম সুলেমানের ভেতর এইসব চলার মাঝেও তারা অনেক সুন্দর সময় অতিবাহিত করতো।
তাদের মাঝে যে এত সমস্যা চলছে সুলেমান তা কখনও কাউকে বলতো না সে নিজের মাঝে নিজের দুঃখ গুলো কবর দিতো।
আর হুররাম সবসময় চাইতো সুলেমান যেন তার ইশারায় চলে।
সুলেমান এত মানসিক অশান্তিতে থাকার পরও সে কখনও কাউকে অভিযোগ করতো না, এক রাতে হুররাম সুলেমানদের বাসা থেকে বের হয়ে যায়।তখন হুররাম তার রকি মামার সাথে তার খালাদের বাসায় থাকে তখন সুলেমান কিছু না বুঝতে পেরে সুলেমানের বাবা কে সাথে নিয়ে হুররামকে আনতে যায় তখন হুররামের বাবা আসে হুররামের কেন এখানে এসেছে তা সুলেমান বলতে চাচ্ছিল না তারপর ইঙ্গিত দেয় তারপর হুররামের মোবাইল রেখে দেয় হুররামের বাবা এবং মামা।
তারপর থেকে হুররাম তার বাটন মোবাইল চালানোর অনুমতি পায় তার পরিবারের সাথে যোগাযোগের কথা বলে তারপর সে সেই মোবাইল দিয়ে সবার খোঁজ নিতো এবং যথারীতি স্বামীর নামে পরনিন্দা করতো এবং স্বামী তার শ্বশুর বাড়ির মানুষের কাছ থেকে মানসিক চাপে থাকতো।
সুলেমানে দোষ ছিল একটি সে ইসলামের পথ অনুসরন করতে বলতো তার স্ত্রীকে এতে রগচটে যেতো এবং তার পরিবারকে জানাতো এবং পরিবার হুররামকে না বুঝিয়ে সুলেমানকে লাঞ্ছিত করতো।
সুলেমান তারপরও সহ্য করে হুররামের সাথে ভালো আচারন করতো এবং দিনের পর দিন হুররাম সুলেমানের প্রতি বিরক্ত হতে শুরু করে।

পর্ব ৩ - সুলেমান হুররামের সংসার
লেখক- মোঃশরীফুল ইসলাম শান্ত

দেখতে দেখতে দিনের পর দিন চলে যাচ্ছিল সুলেমান হুররামের সংসারের। প্রায় রাতে বাসায় ফিরে হাসিমুখে সবকিছু ঠিকঠাক তারপর তারা দুজন কিছু না কিছু নিয়ে ঝগড়ায় লিপ্ত হতো।
সুলেমান কখনও ঝগড়া করতো না সে হুররামকে বুঝিয়ে বলতো কোন জিনিসটা ঠিক আর কোন কাজটা করা ঠিক হচ্ছে না।
সুলেমান যখন কিছু বোঝাতে যেতো তখন হুররাম শুনতো কিন্তু কিছুক্ষণ পর আবার কথা গুলো অমান্য করলে হুররাম সুলেমানকে গালি গালাজ শুরু করতো এবং সুলেমানের গায়ে হাত তুলতো।
সুলেমান মুখ বোঝে সহ্য করতো এবং অজরে কান্না করতো।
হুররাম সুলেমানের চোখের পানি দেখে সে বসে থাকতো না,হুররামও কান্না করতো আর ক্ষমা চেয়ে বলতো আর এমন হবে না এবং আল্লাহর কসম কেটে ওয়াদা করতো যে সুলেমান তোমার সব কথা মেনে চলবো তুমি তো আমার ভালোর জন্যই বলো।
হুররাম সবসময় ভাবতো সুলেমান তার বাবা মা কে হয়ত সম্মান করে না তবে সুলেমান সবসময় হুররামের আত্বীয় স্বজনকে ভালোবাসতো তবে হুররামের ভুলের জন্যই এমনটা মনে হতো।
হুররাম তার পরিবারের লোকদের সবসময় সুলেমানের নামে নিন্দা করতো এমনটার কারনে হুররামের পরিবারের মানুষেরা সুলেমানকে জামাই হিসাবে অতটা ভালো চোখে দেখতো না।
হুররাম এতটা বোকা ছিল সে তার স্বামীকে রাজা না বানিয়ে রানী না হয়ে, হুররাম গোলাম বানিয়ে গোলামের বউ হতো,তার পরিবারের সামনে।
দেখতে দেখতে তাদের বিয়ের দুই মাস পূর্ণ হয়,হুররামকে প্রতি মাসে সুলেমান কিছু না কিছু সারপ্রাইজ দিয়ে স্মরণীয় করে রাখতো প্রতিটা সময় আর বিশেষদিন হলে বিশেষ পরিকল্পনা থাকতো সুলেমানের তবে হুররামের পরিবারের মানুষেরা তা বাঁকা চোখে দেখতো, হুররামকে সুলেমান সব সুখ দিয়ে রাখতে চেয়েছিল আর সুলেমান চেয়েছিল শুধু তার স্ত্রী আল্লাহর বিধান অনুযায়ী তার সংসার জীবনটা অতিবাহিত করুক।কিন্তু হুররাম উদাসীন ছিল।তবে এক রাতে মিথ্যা কথা বলার সুলেমানের ল্যাপটপ থেকে ছবি ডিলিট করে অস্বীকার করে তারপর হুররাম স্বীকার করে এই কারনে সুলেমান হুররামকে বলে নামাজ পড়ে তওবা করো মিথ্যা কথা বলার জন্য তারপর হুররাম তওবা করে সুলেমান বুকে টেনে নেয়।
অন্যদিন হুররামকে আস্তে করে সরিয়ে দেয় ধাক্কা দিয়ে হুররাম অভিনয় করে তারপর লিপিস্টিক লাগিয়ে বলে তার হাত কেটে গেছে তুই আমার হাত কেটে দিছোস,কিন্তু পরবর্তীতে সত্য গোপন থাকে না প্রকাশ পায়।প্রায় সময ছলনার আশ্রয় নিতো হুররাম।তাদের বেশিরভাগ ঝগড়ার হুররামের ভুল থেকে শুরু হলেও হুররাম একটা সময় বোঝতে পেরে নামাজ পড়ে তওবা করতো তখন সুলেমান হুররামকে সব সুখ দিতো।
তারপরও হুররাম মনে মনে একটা ক্ষোভ রেখে দিতো সুলেমানের প্রতি কারন সুলেমান কথা গুলোকে তার জীবনের বোঝা মনে করতো।
কিছুদিন পর সুলেমানের বাবা হুররামের মা থেকে কিছু টাকা চায় সুলেমান হুররামের জন্য একটি পালঙ্ক তৈরি করে দেবার জন্য ধার হিসাবে তবে হুররামের মা কথা গুলো সবাইকে জানায় এবং হুররামের স্বামী সুলেমানকে এই বিষয় নিয়েও মানসিক চাপ প্রয়োগ করে পরবর্তীতে হুররামের পরিবার পরিকল্পনা করে তারা তাদের মেয়েকে নিয়ে যাবে এবং পরে পালঙ্কসহ তাদের মেয়েকে পাঠাবে কিন্তু সুলেমান বিষয়গুলো জানতে পেরে তার বাবার উপর ক্ষীপ্ত হয় এবং সরাসরি বলে দেয় দরকার নাই এদের থেকে টাকা নেওয়া যারা কিনা ছোট বিষয়কে খালু, মামাসহ সব মানুষকে বলে বেড়ায় এবং সুলেমানের বাবাকে অপমান করতে চায়।
সুলেমান তারপর সবকিছু নিজে ঠিক করে নেয়,দুই পক্ষের সম্পর্ক ঠিক রাখার জন্য অগ্রণী ভূমিকা রাখে।তারপর খোদার নিকট শুরকিয়া আদায় করে।
সুলেমান কখনও একটি রাত হুররামকে ছাড়া থাকবে তা কল্পনা করতে পারতো না, যতই যা হোক।
সুলেমানের ভালোবাসর কমতি ছিল না আর সেই ভালোবাসাকে কাজে লাগিয়ে হুররাম চাহিতো তার বাবা মা এবং আত্বীয়দের কাছে মাথা সবসময় ছোট করে যেন রাখে কারন সুলেমানের বাবার অনেক সম্পদ রয়েছে আর হুররামদের তেমন কিছু নেই।হুররামের এই চিন্তার কোরবানি হয় সুলেমান।সুলেমান তারপরও হুররামকে ভালোবাসতো কৃপণতা করতো না,হুররামের সব কথা মেনে নিতো যতই যার কাছে ছোট হতে হোক না কেন।
হুররামও ভালোবাসতে শুরু করে , সুলেমানের অপেক্ষায় থাকতো হুররাম,যখন সুলেমান বাসার বাহিরে কাজে যেতো।
স্মার্ট ফোন হুররামের হাতে না থাকাতে শুধু এখন সুলেমানকে নিয়ে ভাবে এবং তার প্রতিক্ষায় থাকতো।
সুলেমান হুররামের প্রতি ভালোবাসা সকলের কাছে অনুসরণীয় হয়ে থাকে সেভাবে সুলেমান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেে প্রকাশ করতো এবং সবাই অনেক বেশি ভালোবাসতো এবং অনুসরণ করতো এই দুজনের জুটিকে। এছাড়াও অনেক কারনও আছে কেননা তারা দুজন যখন দুজনের কথা ভাবতো তখন তাদের সুখ সমৃদ্ধি আসলে আল্লাহ প্রদত্ত প্রশান্তির জায়গায় নিয়ে যেত।
তারপর একদিন গ্রাম থেকে হুররামের মা আসে তখন আবার বেড়ে যায় হুররামের অবাধ্যতা,হুররামকে পর্দা করা ছাড়া মানা করতো বাসা থেকে বের হতে তবুও তার মা থাকাতে একদিন বের হয়।
হুররামের বাবা মা কখনও তাদের হুররামকে পর্দায় রাখেনি এবং অতটা প্রাক্টিসিং মুসলিমও না তারা তবে সুলেমান বোঝানোর পরও সে পর্দা করার প্রতি উদাসীন হয়ে পড়েছিল।
সুলেমানের দৃষ্টিভঙ্গি মুসলিমদের ইমানদার মুমিনদের থেকে প্রশংসা করালেও নারীবাদি ফেমিনিজমদের কাছে হুররামের চাওয়া গুলোই ঠিক তবে স্পষ্টত যে নারীবাদি সমাজ কখনই আল্লাহর বিধান মেনে চলে না এটাই ইসলামের সাথে বৈপরীত্য।

পর্ব ৪ - "সুলেমান হুররামের সংসার"
লেখকঃ মোঃশরীফুল ইসলাম শান্ত

দেখতে দেখতে সুলেমানের জন্মদিন চলে আসলো।জীবনসঙ্গিনী হুররাম রাত ১২টায় অনেক সুন্দর এক পরিবেশ তৈরি করে কেক আর মোমবাতি দিয়ে সুলেমানকে আনন্দিত করলো।তারপরের দিন সুলেমান, হুররামের আত্বীয়-স্বজন সবাইকে তাদের বাসায় নিমন্ত্রণ করলো। হুররামের মা এবং খালা এসে সুলেমানের মায়ের সাথে গল্প করলো সাথে সুলেমানের প্রিয় খিচুড়ি রান্না করলো। হুররাম পুরো ঘর সাজালো, হুররাম সুলেমান থেকে জন্মদিনের কেক কেনার জন্য হাজার টাকার একটি নোট নিলো তারপর সে কেক আনলো কিন্তু সুলেমান যে কেক-এর কথা বলে দিয়েছিল সেই কেকটা আনে নাই হুররাম তারপর হুররামকে বললো কেকটা পরিবর্তন করে নিয়ে আসতে, সুলেমান রাগ করে শুয়ে ছিল তারপর হুররাম রাগ দেখিয়ে খালার বাসায় যেয়ে সুলেমানের পচ্ছন্দের কেকটি নিয়ে আসে তবে এতে হুররামের আত্বীয় স্বজন সুলেমানের কেক পচ্ছন্দ না করায় তার জন্মদিনের উৎসবে আসতে অস্বীকৃতি জানায়।তারপর সুলেমানের মা তাদের বাসায় যেয়ে তাদের আনতে গেলে অপমান সূচক শব্দ বলে কিন্তু সুলেমান তার মাকে অপমান করা হয়েছে তার মা যাওয়ার পরও আসেনি তা বুঝতে দেয়নি তার ছেলেকে।সুলেমানের মা তার পুত্রবধূ হুররামকে নিয়ে কেক কাটে।
এই প্রথম সুলেমানের এতো সাদামাটা জন্মদিন যায় এত বছরের ভেতর, এর আগের জন্মদিন গুলো থাকতো সুলেমানের অনেক ব্যস্ততম দিন। সুলেমান তার বিদ্যালয় বন্ধুদের সাথে সকালে,বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুদের সাথে দুপুরে, কলেজ বন্ধুদের সাথে বিকালে এবং রাতে পরিবারের সব সদস্যদের সাথে উদযাপন করতো তাদের বন্ধুদের অনুরোধে তবে এবার হুররাম তার পাশে ছিল বলে সব অনুষ্ঠান করতে মানা করে দেয় এবং অজুহাত দেখায় বন্ধুদের তবে যা হলো তা সুলেমানের মনে দাগ কেটে রইলো।
কেক কেটেছিল হুররামের মায়ের দেওয়া পাঞ্জাবী পড়ে সেটা অনেক পচ্ছন্দ করেছিল সুলেমান কারন তার শ্বাশুড়ি দিয়েছেন।
কেক কাটার পরবর্তীতে হুররামের মা সুলেমানদের বাসায় এসে দুঃখ প্রকাশ করে তবে হুররাম সেদিন গালিগালাজ করে সুলেমানকে।
তারপর এভাবে চলতে থাকে তাদের দিন।
সুলেমান হুররামকে নিয়ে যায় প্রায় বাসা থেকে ঘুরতে বের হতো, হুররামের পচ্ছন্দের খাবার খাওয়াতো।
বাসা থেকে বের হলেই হুররামের পচ্ছন্দের জিনিস কেনাকাটা করতো।
তারপরও হুররাম বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জিনিস নিয়ে তার পরিবারের কাছে মোবাইল ফোনে সুলেমানকে ছোট করতো।
হুররাম সবসময় সুলেমানকে নিজের পরিবারের সব সদস্যদের নিকট ছোট করে রাখতো।
উনিশ থেকে বিশ হলে সুলেমান যখন বোঝাতো হুররামকে, হুররাম তখন তার পরিবার দিয়ে সুলেমানকে অপমান করাতো।
হুররাম মাঝে মাঝে চাহিতো, সুলেমান যেন তার বাবা মা কে ছেড়ে একা আলাদা থাকা শুরু করে শুধু তাকে নিয়ে সংসার করে।
কিন্তু সুলেমান সবাইকে নিয়ে থাকতে চাহিতো যেন কাউরো মনে তার আচারনে কষ্ট না লাগে।
হুররাম সুলেমানের ভাবিকে দেখতে পারতো না, বিভিন্ন সময় সুলেমানের নিকট অভিযোগ করতো ঘরের কাজ নিয়ে।
সুলেমানের ভাবি অল্প কাজ করতে চাহিতো তবে তার কাজ সে যথাযথ করতো এবং মেঝো বউ হুররামকে দ্বারা বেশি হাতের কাজ করাতে চাহিতো এতে হুররামের মনে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়।
হুররামের নিকট একদিন সুলেমানের ছোট ভাই মেহমেদ সুলেমানের নামে বলে যেন সুলেমান যেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কম সময় দেয় এতে নাকি মেহমেদের সমস্যা হচ্ছে, ঘটনাটা আসলে ঘটেছিল মেহমেদকে কুপরামর্শ দিয়েছিল সুলেমানের বড় ভাই মোস্তফার বউ ভাবি নুর বানু।
এতে করে মেহমেদ সুলেমানের স্ত্রী নিকট অভিযোগ গুলো করে তারপর হুররাম সুলেমানকে সব কিছু বলে তারপর সুলেমান ব্যাপারটা অতটা গুরুত্বের সাথে নেয়নি।
দেখতে দেখতে তাদের সম্পর্কের তিনটি মাস চলে গেল।
বিভিন্ন ঘটনার পরিক্রমায় তাদের দিন গুলো অতিবাহিত হতো,সুলেমানের চোখের পানি শুধু তার রব দেখতো যখন হুররামের আচারনে কষ্ট পেয়ে অজরে কাঁদতেন।
হুররাম নামাজে অমনোযোগী ছিল তবে সুলেমানের কষ্টতে তার পরিশ্রমে হুররাম এক সময় নামাজ ঠিক মতন পড়া শুরু করে তবে কিছু সময় খুব অলসতা করতো তা দেখে সুলেমানের মনে কষ্ট দিতো কারন আল্লাহ ভীতি পারে একজন নারীকে সঠিক পথে রাখতে তা মনে প্রাণে সুলেমান বিশ্বাস করতেন।
হুররাম সুলেমানের বেশি সময় কাটাতো রাতের বেলায় গল্প করার মাধ্যমে তারা দুজনে দুজনের মনের কথা গুলো শয়নকক্ষে শুয়ে সবকিছুই একে অপরকে বলতেন।
হুররাম রাতের বেলায় কফি,বার্গার, খিচুড়ি, খাসি দিয়ে মজাদার খাবার ইত্যাদি স্বামীর জন্য তৈরি করতে পচ্ছন্দ করতেন।
স্বামী অসুস্থ হলে হুররাম তার সব কিছু ভুলে স্বামীর সেবায় নিয়োজিত থাকতেন।সুলেমান হুররামের কোলে মাথা রেখে সব দুঃখ গুলো বলে যেতেন ততক্ষণ যতক্ষণ না হুররাম আবার সুলেমানের অবাধ্য হয়ে নাফরমানি কাজ না করে।

পর্ব-৫ "সুলেমান হুররামের সংসার"
লেখক-মোঃশরীফুল ইসলাম শান্ত

সময় ও স্রোত কেউ কাউরো জন্য অপেক্ষা করে না।সময় তার নিয়মে ছুটে চলছে আর পৃথিবী নিজের একটি করে দিন শেষ হয়ে কেয়ামতের নিকট চলে আসছে তেমনই পৃথিবীর মানুষদের কাউরো জন্ম হচ্ছে কেউ ইহজগৎ ত্যাগ করছে আর কাউরো জীবনের একটি করে দিন চলে যাচ্ছে যা আর ফিরে পাবার নয়।
তেমনই সুলেমানের বিবাহের পরের এক একটি দিন সে এক একটি নতুন অভিজ্ঞতার সামনে এসে দাঁড়াচ্ছে।
হুররাম কোন কিছু নিয়েই সুলেমানের সাথে মনমালিন্য হলেই হুররাম সে মুঠোফোনে দিয়ে তার পরিবারে লোকদের জানিয়ে দিত এবং কোন কিছুর প্রয়োজন সুলেমান যদি কোনো কারনবশত সে তা কিনে দিতে বিলম্ব করে তখনও সে তার পরিবারের নিকট বলে সুলেমানকে ছোট করতো কারন সুলেমানকে প্রতিবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হতো যা সুলেমানের অন্তরে দাগ কেটে যায়।
সুলেমান হুররামকে বোঝাতো স্বামীর নামে গীবত করা অনেক বড় গুনাহ এবং কি স্বামী যদি কোনো ভুল করে তাহলে স্বামীকে আগে বলতে হয় স্বামীকে বুঝাতে হয় তদ্রূপ স্ত্রী ক্ষেত্রেও তবে হুররাম সুলেমানের হাদীস থেকে বলা কথাও শুনতো না।
সে বিয়ের কয়েক মাসে তার বাবা মা নিয়ে অনেকবার সুলেমানকে বিচারে সম্মুখীন করিয়েছে তাদের মেয়েকে তারা না বুঝিয়ে সুলেমানকে দোষারোপ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতো।
দেখতে দেখতে সুলেমান হুররামের জীবনে প্রথম রমজান মাস চলে আসলো। প্রথম রমজানে সেহরি,তাহাজ্জুদ, ফজর নামাজ শেষে তারা দুজন এলাকায় রহমতের শীতল বাতাস উপভোগ করতে বের হয় এবং খুব সুন্দর ছিল তাদের সকাল।
এভাবে রমজানের ৩য় দিন সুলেমান, হুররামের মোবাইল থেকে নাম্বার ডিলিট করা দেখে সে রাগ করে বলে তুমি যা করো তা ঠিক না আর কখনই করবা না।
তারপর সুলেমান রোজগার করতে বের হয়ে যায়,
হুররাম সেদিন তার স্বর্ণের গহনা থেকে শুরু করে বিয়ে থেকে আজ পর্যন্ত যত কিছু আছে লাগেজে ডুকিয়ে নিয়ে ঘরে সুলামানের মা বাবাকে না বলে লুকিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে তার খালার বাসায় চলে যায়।
তারপর সুলেমানকে হুররাম কল দিয়ে বলে যে সে আর বাসায় ফিরবে না।তারপর সুলেমান তার মা কে কল দিয়ে বলে তারপর তার মা কিছুই জানেনা বলে।
তারপর সুলেমান বাসায় আসে হুররামকে অনেক বোঝায় এমনকি সুলেমান অজরে কাঁদে কেননা কোনোদিন হুররামকে ছাড়া তাদের বিয়ের পর একা রুমে থাকে নাই।তারপর দেখতে দেখতে মাগরিবের আজান দেয় তখন সুলেমান রাস্তায় দাঁড়িয়ে তার ইফতার হুররাম যে বাসায় সেখানে তাকিয়ে মাউন্ট ডিউ দিয়ে করে। এই অভিজ্ঞতা ছিল এই প্রথম সুলেমানের কাছে যে রাস্তায় ইফতার করলো।
হুররাম তবুও ফিরে তাকালো না। হুররাম তার পরিবারের সবাইকে অন্য সময়ের মতন আবারও সুলেমানের নামে আজেবাজে কথা বলা শুরু করে এবার সুলেমানের ভাবির নামে ও সুলেমানের মায়ের নামেও বিচার দেয়।
সুলেমান তারাবি নামাজ শেষ করে কিছু দ্রব্যাদি কিনে হুররামের খালার বাসায় যায় হুররামকে নিয়ে আসার জন্য কিন্তু হুররামকে দরজার বাহিরে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।
হুররামের বাবার সাথে সুলেমান কথা বলে তখন হুররামের বাবা বলে আমার মেয়েকে নিয়ে একা থাকতে পারলে অর্থাৎ সুলেমানের বাবা মা ছাড়া থাকলে তাদের মেয়ে সুলেমানের নিকট যাবে।
সুলেমান কথাটি শুনে অনেক কষ্ট পায় এবং হুররামের বাবাকে বুঝিয়ে বলে প্রতিটা ছেলের কাছে তার বাবা মায়ের হক কতটুকু।
তারপরও যখন কাজ হলো না তখন হুররামের খালুর নিকট মোবাইল দেয় সেও চায় না হুররামের কাছে থাকুক সুলেমান।
তারাবি পড়ার পর মশার কামড় ঘন্টার পর ঘন্টা একটা মাঠে দাড়িয়ে হুররামের খালার বাসার সামনে থেকে বলতেছিল তারপরও হুররাম বা হুররামের পরিবারের কেউ ডুকতে দেয়নি তাদের জামাইকে।তারা শুধু মুখে বলার সময় বলতো তুমি বাবা আমাদের পরিবারের বড় জামাই কিন্তু সম্মানের বেলায় নিম্ন শ্রেণীর মানুষের ন্যায় আচারন ছিল। সুলেমান কখনই ভাবেনি সে এমন একটি শ্বশুর বাড়ির পরিজন পাবে।
ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে থাকতে থাকতে হুররাম সুলেমানকে তারপরও ঘরে ডুকতে দেয়নি। রাত ১টার কিছুটা আগে সুলেমান এত সময় ধরে হুররামের পরিবারের সবাইকে মুঠোফোনে কল দেওয়া শেষ কিন্তু কেউ অনুমতি দেয়নি।
সুলেমান কোনো রাত কাটায়নি হুররামকে ছাড়া সে চাচ্ছিলও না আজকের রাতটা কাটাক।
অবশেষে সুলেমান পরবর্তী রোজা ঠিকভাবে রাখার জন্য একবুক কষ্ট নিয়ে তার বাসায় ফিরে যায় এবং সারারাত ঘুমাতে পারেনি সেহরি খেয়ে নামাজ পড়ে কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে নেয়।
তারপরের দিন সকাল সকাল আবার হুররামদের বাসায় যায় তখন অবশেষে সুলেমান তাদের খালার বাসায় ডুকতে পারে।
সুলেমানের কর্মব্যস্ততা সব দূরে ঠেলে দিয়ে হুররামের সাথে ছিল পুরোটা দিন।
তারাবির পর হুররামের পরিবার আবার বিচার বাসালো,
তারা এলাকার এক প্রভাবশালী নেতা জয়কে ডাকলো তারপর শুরু হয় বিচারকার্য।
হুররামের বাবা খালু খালা আর সুলেমানের বাবা মা সেখানে উপস্থিত ছিল।
প্রভাবশালী নেতা যথাযথভাবে বুঝিয়ে বললো কিভাবে একটি সংসার করতে হয়।স্বামীর কথা মেনে চলতে হয়, স্বামীর পরিবার তোমার পরিবার এদের নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
জয় আগে থেকে সুলেমান ও সুলেমানের পরিবারকে চিনতো ও জানতো তারা কেমন কারন সুলেমানের বাবা এলাকার সম্মানিত দশজনের নাম বললে তার নাম শীর্ষে।
সুলেমানের নামেও কোনো খারাপ রেকর্ড নেই এবং সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব ছিল।
জয় সুলেমান হুররামকে নিয়ে অনেক প্রশংসা করলো তাদের খাবারের সময় নেতার পরিবারের লোক সুলেমান ও হুররামকে নিয়ে আলোচনা করতো কারন আদর্শ একটা জুটি ছিল পুরো এলাকার মাঝে এবং কি প্রায় মানুষ তাদের দুজনের মতন হতে চাইতো কেননা সুলেমান সবসময় তাদের ভালো সময়টা সবার সাথে শেয়ার করতো।
সুলেমান মানসিকভাবে ও শারীরিকভাবে নির্যাতনের কথা কেউ জানতো না।
প্রভাবশালী নেতা সেদিনে বিচারক জয় হুররামদের পরিবারকে জানিয়ে দেয় খাঁটি একটা ছেলে পেয়েছেন জামাই হিসাবে আপনাদের উচিত সুলেমানকে অনেক আদর করা এইসব অহেতুক বিচারকার্য করে সুলেমানকে ছোট করার কোনো প্রশ্নেই আসে না। সুলেমানের মতন জামাই সবার ভাগ্যে থাকে না।
কি অদ্ভুত পৃথিবী যাকে এনেছিল হুররামের পরিবার সুলেমানকে ও তার পরিবারকে  অপমান করে ছোট করে রাখার জন্য কিন্তু বিচারক সত্য মিথ্যা যাচাই বাচায় করে সিদ্ধান্ত নিল, সুলেমানের কোনো দোষ নেই এবং সুলেমানের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিল।
তারপর হুররামকে সুলেমানের নিকট তাদের বাসায় চলে যেতে বলে কিন্তু হুররাম সুলেমানকে বুঝিয়ে তার খালার বাসায় সুলেমানকে নিয়ে সেই রাত থাকে।
পরবর্তীতেও হুররাম সুলেমানের বাসায় দিনে থাকতো না,রাতের বেলায় তাদের খালার বাসায় থাকার জায়গা সুলেমান যে পরিবেশে বড় হয়েছে সুবিধামত না থাকার কারনে হুররাম বলে রাতে শুধু তোমার সাথে তোমার বাসায় থাকবো।
এভাবে রমজান মাসের দিনের পর দিন চলতে থাকে।
সুলেমান হুররামকে নিয়ে হুররামের জন্য, হুররামেন বোন,ভাইয়ের জন্য ঈদের জন্য কেনাকাটা করে।
তার কিছুদিন পর যখন ঈদের দশদিনের মতন বাকি তখন হুররামকে তার খালা খালু তাদের বাসা থেকে চলে যেতে বলে কারন অনেকদিন হলো হুররাম তাদের বাসায় আছে।
এতে হুররামের মনে অনেক কষ্ট লাগে সে গ্রামে তার মাকে জানায় তার মা বলে তুই গ্রামে চলে আয়।
সুলেমান জানতে পেরে সুলেমান অনেক কষ্ট পায়,সুলেমানদের এত কিছু থাকার পরও হুররামের শুধু ইসলামের পথে না চলার কারনে সুলেমানদের বাসায় থাকছে না।
এভাবে কিছুদিন পর হুররাম সিদ্ধান্ত নেয় সে গ্রামে যাবে।
সুলেমান একা হুররামকে গ্রামে দিতে চাচ্ছিল না তারপরও হুররাম জেদ করে তারপর তার বাবা মাইক্রোতে করে গ্রামে পাঠানোর ব্যবস্থা করে।
সুলেমান আবারও অনেক কষ্ট পায় কারন হুররামকে ছাড়া একটা রাত শুধু কাটিয়েছে এখন আবার কিছুদিন একা থাকতে হবে।
হুররাম গ্রামে যাওয়ার পর শুরু হয় নতুন এক ঘটনা।

পর্ব-৬ "সুলেমান হুররামের সংসার"
লেখকঃ মোঃ শরীফুল ইসলাম শান্ত

গ্রামে যাওয়ার দিন হুররাম সুলেমানকে কল দেয় তারপর যাত্রাপথে সুলেমান খোঁজ খবর নিতে থাকে।
বিয়ের পর সুলেমানকে ছাড়া এত বড় পথ আগে কখনও যায়নি।
রাতের অন্ধকারে গ্রামে যেয়ে পৌঁছায় হুররাম।সুলেমানকে পৌঁছানোর পর জানায়।হুররাম তার মায়ের কাছে যেতে পেরে আনন্দিত হয়। তারপর হুররাম পরিপাটি হয়ে খাওয়া শেষ করে সুলেমানের সাথে সারা রাত কথা বলে।
তার কিছুদিন পর তাদের বিবাহের যে দিনটি সবসময় উভয়ে স্মরণীয় করে রাখতো সেই রাত্রিতে দুইজন দুইজন থেকে অনেক দূরে হুররামের কারনে এতে সুলেমান অনেক কষ্ট পায়।
এভাবে দিনের পর দিন কেটে যায় অবশেষে ঈদের কিছুদিন আগে সুলেমান তার শ্বশুর বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।
সুলেমানের কাছে যাত্রাপথটি ছিল রোমাঞ্চকর তবে গ্রামের কাছাকাছি যাওয়ার পর দুর্ভোগ পোয়াতে হয় কেননা রাস্তা ছিল খুব ভাঙাচুরা। প্রায় চৌদ্দ ঘন্টার যাত্রা শেষে সুলেমান গ্রামে পৌঁছায়, সুলেমানকে বরন করে নেয় হুররাম ও তার দাদা।
সুলেমান হুররামদের বাসায় ডুকে পা ধরে তার শ্বাশুড়ি মা'কে সম্মানসূচক সালাম করে। তারপর গোসল শেষ করে যাত্রাপথের কাযা নামাজ গুলো পড়ে নেয় সেই ভোর বেলায় এরপর নিদ্রাতে যায় এবং সকালে ১১ টায় ঘুম থেকে উঠে হুররামকে বাজারে নিয়ে ফলফলাদি, মিস্টি,পান-সুপারি ক্রয় করে তার দাদাশ্বশুর  ও নিজের শ্বাশুড়ির জন্য তারপর বাসায় ফিরে যোহরের সালাতের প্রস্তুতি নেয়।
সুলেমান তার শালীকা ও হুররামের একমাত্র কাকাতো ভাই ও মামাতো ভাইয়ের জন্য তার শহর থেকে নিয়ে আসা জামা কাপড় শাট প্যান্ট ও হুররামের জন্য নিয়ে আনা ঈদের পোশাক দেয়। 
সুলেমান সবসময় সবার ভালোবাসা পেতে চাহিতো এবং সুলেমানের আচারন ছিল সবার প্রতি কোমল ও ভদ্রতা সংযুক্ত।
রমজান মাসের শেষে দিকে এশার সালতের আগে সুলেমান হুররামকে একটি কাগজে কিছু লেখা দেখতে পায় তা দেখে হুররামকে প্রশ্ন করে এটা কি তুমি লিখেছ তারপর সে অস্বীকার করে তারপর স্বীকার করে এবং সুলেমানকে গালীগালাজ করে কেন সে জিজ্ঞাসা করলো এই লেখা নিয়ে তখর হুররামের মা নিচ থেকে উঠে আসে এবং তাদের জামাইকে হীন ভাষায় বলতে থাকে বিয়ের শুরু থেকে তার মেয়ে কষ্ট দিচ্ছে বিভিন্ন ব্যাপারে কেন জিজ্ঞাসা করা হয় ইত্যাদি।
যেখানে হুররাম সুলেমানের জীবনটা কঠিন করে তুলেছিল সুলেমানের গায়ে হাত তুলাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কিন্তু হুররামের মায়ের মুখে সুলেমান হুররামের মাঝে ঘটে যাওয়া সবকিছুর কথা শুনে হতবাক হয়ে পড়ে যেখানে হুররামের ভয়ানক দোষ গুলোকে না দেখে সুলেমানের ইসলামিক পরিভাষায় বোঝানোকে দোষ হিসাবে পরিগণিত করে।
এরপর হুররামের ছোট কাকা দাদা দাদী এসে সুলেমানকে বোঝায় তারপর সুলেমান হুররামের প্রতিটা কথার পেছনের সব কিছু বলার পর সবাই চুপ হয়ে যায় কেননা সুলেমান কোনো দোষ করেনি তার কাছে প্রতিটা কথার যথাযথ উত্তর রয়েছে বরং হুররাম সুলেমানের জীবনে এসে যে অপকর্ম করেছে নিকৃষ্টতম কাজ স্বামীর গায়ে হাত তোলা থেকে শুরু করে গালিগালাজ ইত্যাদি তা কখনই সুলেমান কাউকে বলেনি বরং হুররাম দেখলো হুররাম ও তার মায়ের সাজানো ফাঁদ ই তারাই হুররাম সম্পর্কে তার অভিযোগের পিছনে সঠিক তথ্য জেনে সুলেমানকে আর অপমান করতে পারলো না।
সেদিন একা সুলেমানের পাশে তার রব ছিল যিনি সুলেমানকে সত্য প্রতিষ্ঠিত করে নিজের সম্মান অটুট রাখতে সাহায্য করে।
সুলেমান তার পরিবার থেকে শুরু করে সমাজে ছিল সম্মানিত তবে তার স্ত্রী তার বাবা মা আত্বীয় স্বজনের কাছে ছোট করে রাখতো কারন হুররাম জানতো তাদের অসহায়ত্বের কথা তা ধামাচাপা দিতে সুলেমানকে যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করতো না ও তার পরিবারের কাছে সবসময় ছোট করে রাখতো।
তবে সুলেমান ছিল বিনয়ী মানুষ সে কোনো কিছু খারাপ দৃষ্টিতে নিতো না বরং আল্লাহর নিকট তার সাথে ঘটা প্রতিটা ঘটনার জন্য তাদের হেদায়েতর দোয়া করতো।
তারপর রমজানের শেষে চাঁদ রাত্রিতে সবাই মিলে আতশবাজিসহ আনন্দ করে কারন সুলেমান দুঃখ ভুলে থাকতো ও হুররামের মুখে সবসময় হাসি দেখতে চাইতো।
ঈদুল ফিতরের দিন সবাই মিলে ঈদের নামাজ শেষ করে সবাইকে সালাম করে অনেক দূরে একটি নদীর উপর ব্রিজে সুলেমান তার স্ত্রীসহ শালা শালীকে নিয়ে ঘুরতে যায়।
সেখানে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর প্রবল বৃষ্টিতে আচ্ছন্ন হয় পুরো গ্রাম।
সুলেমান ও হুররাম তা উপভোগ করে সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে আসে।
কিছুদিন পর নানা শ্বাশুর বাড়ি যায় তাদের আত্বীয়তা জামাই আদর পেয়ে সুলেমানের বেশ ভালো লাগে তবে হুররাম রাতে সেখানে থাকতে চাচ্ছিলো না তাই হুররাম সুলেমান ও হুররামের খালতো বোন নন্দিনীকে নিয়ে বাসায় ফিরে আসে।
তখন হুররামের বাবা বলেছিল হুররাম কোনো সমস্যা করলে যেন তাকে জানানো হয়।
হুররামের বাবা মা ও বোন হুররামের নানা বাড়িতেই থেকে যায়।
সেদিন সুলেমান হুররাম ও তার শালী নন্দিনী একা বাসায় ছিল।
পরেরদিন ভোরে ফজর নামাজের জন্য যখন হুররামকে ডাক দিচ্ছিলো তখন হুররাম রাগে নামাজ না পড়ার অজুহাতে সুলেমানকে অনেক মারধর করে সুলেমান অনেক ব্যাথা পায় তবে সুলেমান আল্লাহকে ভয় করে হুররামের গায়ে কোনো হাত তুলেনি।
হুররাম কয়দিনে যেন নামাজ থেকে দূরে সরে গেল সুলেমান থেকে দূরে থাকার ফলে এমন ঘটনা ঘটলো।
পরেরদিন সুলেমানের ছোট কাকা যিনি রমজানের মাসের সেই বিচারে ছিল তাকে জানায় পরে সবাই আবার একত্রিত হয় তখন হুররাম বলে দেয় আমি সুলেমানের সাথে থাকবো না ওর সাথে সংসার করবো না তখন তার পরিবারের দাদা দাদী কাকার সামনে বলে তবে যখন হুররামকে বোঝাতো হুররাম উগ্র মেজাজের ছিল তাই ওকে কিছু বলা যেত না বরং সুলেমানকে সবায় অহেতুক বোঝাতো যেখানে সুলেমানের কোনো দোষ নেই।
তারা তাদের মেয়ে উগ্রতার কাছে হার মানতো এবং শেষে তাদের মেয়ের পক্ষ নিয়ে সুলেমানকে আগের মতন অপমান করতো।
পরে হুররামের বাবা বলেছিল কোনো সমস্যা করে তাকে জানাতে তাই সুলেমান ঘটনাটি জানায় তার শ্বশুরকে এরপর রাতের বেলায় শ্বশুর শ্বাশুড়ি তাদের বাড়িতে ফিরে আসে।
তারপরের দিন হুররামের সাথে তার মা কুপরামর্শ দিয়ে তাকে থেকে যেতে বলে এবং সুলেমানকে ঢাকায় পাঠিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে।
তারপর শুরু হয় তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে একা সুলেমানের প্রতি মানসিক অত্যাচার আরেকটি বিচার।
হুররামের বাবা মা সবাই জানতো তারা ব্যতীত তৃতীয় পক্ষ সত্য কথা জানলে হুররামকে ও হুররামের পরিবারের যারা হুররামকে প্রশ্রয়কারী তাদের জুতাপেটা করতো তাই তারা কখনও তৃতীয় পক্ষ ন্যায়বিচারক না এনে সুলেমানকে অপমান করার ব্যবস্থা করতো তবে সুলেমান কোনো বিচারে সে দোষী বলে চিহ্নিত হয়নি বরং হুররাম প্রতিবার ক্ষমা চেয়ে আবার সুলেমানের কাছে ফিরে যেত কেননা সুলেমানের মায়া মমতা বিনয়ীতার কাছে সব অন্যায় হার মানে।
সেদিনের বিচারে হুররামকে শিখিয়ে দেয় যেন সে না যায় ঢাকাতে সেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না করে তারপর হুররামকে নানাভাবে সুলেমান বোঝানোর পরও সুলেমানের সাথে শহরে যাবে না তা জানিয়ে দেয় ব্যাপারটা ছিল ডির্ভোস সমপর্যায়ের যা হুররাম সুলেমানকে দিচ্ছে তার মতন তখন না পারতে সুলেমান ব্যাপারটা জানায় তার বাবা মায়ের নিকট তখন তার মা রাগ করে বলে যে সোনা গহনা নিয়ে গেছে তা নিয়ে চলে আসতে কেননা তার মা সেদিন প্রথম জানতে পারে হুররাম তাদের ছেলের গায়ে হাত তুলতো তখন তা শুনে হুররামের মা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা শুরু করে সাথে হুররামও তার মায়ের মতন সুলেমানের মাকে গালি দেওয়া শুরু করে এবং তারা বলে কোর্টে কথা হবে মামলা করবে যেখানে তারা মামলা করলে তারাই ফেঁসে যাবে কিন্তু তাদের শয়তান এতটা বশ করেছিল যে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে প্রথম জামাই তাদের বাড়িতে আসে তার সাথে দুর্ব্যবহার করে।
তারপর হুররামকে সুলেমানের মা বাবা বোঝাতে চায় যে ঢাকায় চলে আসো মা সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে কিন্তু হুররাম কথা বলতে অস্বীকৃতি জানায়।
তারপরের দিন সুলেমানকে হুররাম ছাড়া তার গ্রাম ত্যাগ করে শহরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।
হুররাম সুলেমানের বিনয়ীতার কাছে ছিল পরাজিত তাই শত তার মায়ের কুপরামর্শের পরও সুলেমানকে কল দিয়ে কাঁদে ও সুলেমানের কাছে সবকিছুর জন্য ক্ষমা চাহিতে থাকে এবং ফিরে আসতে বলে।
সুলেমান চাহিলে সেদিন ফিরে এসে হুররামকে নিয়ে আসতে পারতো তবে এখানে এসে লাভ হতো না হুররাম তার মায়ের কুপরামর্শের কাছে হেরে যেতো এবং সেভাবে চলতো তাই সুলেমান মাঝপথ থেকে ফিরে আসেনি।
ঢাকায় ফিরে আসার পর সুলেমান ও হুররামের জীবনে ঘটে যায় অনেক বড় ট্রাজেডি, দু'জন দু'জনা থেকে অনেক দূরে তাদের জীবন কেমন যাবে তা নিয়ে দুইজনে চিন্তিত।

পর্ব -৭ "সুলেমান হুররামের সংসার"
  লেখক-মোঃশরীফুল ইসলাম শান্ত

সুলেমান ঢাকায় এসে পৌঁছালো, বাবা মায়ের সন্তান তাদের কাছে নিরাপদে ফিরে এসেছে তবে তাদের বৌ'মা আসেনি তাতে তারা কষ্ট পেলেও তারা জানতো সুলেমানের সাথে সেখানে কি ঘটেছিল তাই তারা নিরব ছিল।
হুররাম সুলেমানের খোঁজ খবর নিতো এবং কান্নাকাটি করতো তবে হুররামের বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় তার পরিবার।
তাদের কারনে হুররাম ম্যান্টালিভাবে অনেক কষ্ট পেতে থাকে।সে এতদিনে সুলেমানকে ভালোবেসে ফেলেছে ঠিকই তবে কোন এক পিছুটান হুররামের সবসময় ছিল।
এভাবে দিনের পর দিন চলে গেলো, সুলেমানের সাথে হুররামের দাদা ব্যতীত কাউরো সাথে যোগাযোগ ছিল না এবং হুররামের সাথে সুলেমানের পরিবারের কাউরো যোগাযোগ ছিল না।
হুররাম প্রথমে বলতো তার বাবা ঢাকা থেকে গ্রামে আসলে তার বাবার সাথে ঢাকায় চলে আসবে।
হুররাম এভাবে তার পরিবারের পরিকল্পনার অংশ সরূপ মিথ্যা আশ্বাস দিতো সুলেমানকে,সে বিশ্বাস করে অপেক্ষার প্রহর গুনতে থাকলো।
প্রায় এক মাস পর তার বাবা গ্রামে গেলো তবে তার বাবার সাথে হুররাম ঢাকায় আসলো না,
তখন আবার হুররাম নানা দিন নানা কারনে সুলেমানের সাথে ঝগড়া করতো।
সুলেমানকে বলতো তার বাবা মা কে মোবাইল করে বলতে আমায় শহরে যেন নিয়ে আসে তা বলতে।
হুররামের পরিবার গরীব ছিল তবে তাদের অহংকারের শেষ ছিল না এবং হুররামও ঠিক তাদের কথা মতন সুলেমানকে চাপ দিতে থাতে সুলেমান যেন তার বাবা মা কে মোবাইল করে বুঝিয়ে বলে যেন হুররামকে সুলেমানের কাছে যেতে দেয়।
সুলেমান জানতো এতে কোনো কাজ হবে না কারন বিগত সময় সুলেমান দেখেছে তাদের ব্যবহার কেমন তা জানতো।
হঠাৎ একদিন হুররাম কল দেয় আর সুলেমান তার মায়ের সাথে হুররামের কথা বলিয়ে দেয়, হুররামের তখন কলিজা শুকিয়ে আসে তবে সুলেমানের মায়ের সুন্দর কথায় হুররাম যেন শুষ্ক মরুর বুকে পানি উৎস খোঁজে পেলো।
তারপর একে একে সবার সাথে কথা বলে।
একদিন সুলেমানের বাবা নিজ উদ্যোগে সবার সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন করতে চায়,তাই হুররামের বাবা মামা খালা খালুর সাথে বসে কথা বলে তখন সুলেমানের বাবা সুন্দর করে সবাইকে সব বোঝাচ্ছিল একজন স্বামী স্ত্রী একসাথে থাকাটা কতটা জরুরি, একসাথে থাকলে মিল মহব্বত বাড়ে।
তখন হুররামের মামা বলে উঠলো, "আপনাদের নামে মামলা করবো,হুররামকে দিয়ে মামলা করে দেখিয়ে দিবো সবাইকে আদলতে নিয়ে ছাড়বো।"
তখন সুলেমানের বাবার এলাকায় ব্যাপক ক্ষমতা ছিল তখন হুররামের মামাকে এলাকা ছাড়া করাতে পারতো কিন্তু সুলেমানের বাবা ছিলে বিনয়ী মানুষ তাই তিনি তেমন কিছু না করে চলে আসলেন।
পথিমধ্যে হুররামের বাবা, সুলেমানের বাবাকে বললো কিছু মনে কইরেন না হুররামের মামার কথায়।
সেদিন রাতে সুলেমানের বাবা সুলেমানের মা ও ভাইয়ের সামনে বসে ঘটনাটা বললো আর সুলেমানকে বললো তুই যে সিদ্ধান্ত নিবি তা করা হবে তারা মেয়ে দিবে না বললো মামলা করবে বাজে ব্যবহার করলো হুররামের মামা।
তখন সুলেমান অনেক খেপেছিল তবে আল্লাহ ভীতি সুলেমানে নিকট থাকার কারনে তালাকের সিদ্ধান্ত নিলো না নতুবা সেদিন হুররামের জীবন থেকে সুলেমান চিরদিনের জন্য আলাদা হয়ে যেতো, শুধুমাত্র হুররামের পরিবারদের মানুষদের জন্যে।
সুলেমানের উপর গায়ে হাত তোলা থেকে শুরু করে খারাপ গালীগালাজ করা হুররামকে প্রতিবার ক্ষমা করে দিতো এবং ধৈর্য ধরে হেদায়েতের দোয়া করতো।
সেদিন রাতে হুররাম সুলেমানকে মোবাইল করে তারপর হুররাম কান্নাকাটি করে ক্ষমা চায় তার মামা উদ্ধত আচারনের জন্যে।
সেদিন রাতে হুররামের জীবনের অনেক ঘটনা তিন ঘন্টা যাবৎ মুঠোফোনে সুলেমানকে বলে কিভাবে কি করেছিল বিয়ের আগে কার কার সাথে অবৈধ সম্পর্ক ছিল, কার সাথে কি করেছে এবং তার মায়ের সমর্থন ছিল কখনই হুররামকে কোনো বাঁধা দিতো না।
তারপর কয়েদিন যায় পরে হুররাম বলে সুলেমান তুমি আসলে আমি যাবো তারপর সুলেমানের বাবা হুররামের মায়ের সাথে কথা বলে তারপর সুলেমান একদিন যেয়ে হুররামকে সাথে করে তার শহরে নিয়ে আসে।
দিনের পর দিন যেতে থাকে হুররাম সুলেমানের সম্পর্ক ভালো হতে থাকে, সুলেমান হুররামকে নানা জায়গায় ঘুরতে নিয়ে যেতো অনেক কিছু প্রতি সপ্তাহে কিনে দিতো।
সুলেমান হুররামের ভালোবাসা বাড়তে থাকলো, সামনে ঈদ আসলো তারপর হুররামের জন্মদিন।
হুররামের জন্মদিনে অনেক সুন্দর একটি সারপ্রাইজ দেয় পুরো রুম মোমের আলোতে সজ্জিত করে সেটা ছিল হুররামের জীবনে পাওয়া সেরা জন্মদিন।
তারপর ভালোভাবে কিছুদিন গেলো ঝগড়াবিহীন এক অনবদ্য সুসম্পর্ক।
একদিন সুলেমান হুররামের মাঝে সামান্য মনমালিন্য হলো, তখন হুররামের তার মা কে কল দিয়ে বলে সব কথা।
তারপর হুররাম ও তার মায়ের মাঝের হওয়া কথা সুলেমান শুনে নেয়।
হুররামের মা বলতেছিলো, "তোকে যেতে মানা করেছিলাম,বলেছিলাম ওদের নামে মামলা করে দেই কিন্তু তুই কথা শুনিস নি,তুই আবার যেতে চাইলি।"
কথা গুলো শুনতে পেয়ে সুলেমানের মন ভেঙ্গে যায় সুলেমান কান্না করে কারন তার শ্বাশুড়ি মা তার স্ত্রীকে কুপরামর্শ দিতো এতোদিন শুধু সন্দেহ করতো তবে এখন সে সরাসরি প্রমান পায়।
তারপর একদিন আবারও হুররাম সুলেমানের গায়ে হাত তুলে তখন সুলেমানের হাতে কামড়ে দেয়, কামড়ের ফলে সুলেমানের হাত থেকে অজরে রক্ত পড়ে এবং প্রচুর ব্যথা হয়ে থাকে জায়গাটি। এছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় খামছি দিয়ে ক্ষতবিক্ষত করে।
সুলেমান হুররামকে বোঝাচ্ছিল তাদের মাঝে ঝগড়া না করতে তখন তার পারিবারিক শিক্ষাকে বাদ দিয়ে ইসলাম যা বলে সেভাবে জীবন গড়তে বলে এবং না খেতে চাওয়াতে সুলেমান হুররামকে খাওয়াতে যায় তখন ঘটনাটি ঘটে।
তখন এইসব শুনতে পেয়ে হুররামের মা এসে দুজনকে আবার মিলিয়ে দেয়।
হুররামের মা ও সুলেমানের মায়ের ভেতর বড় পার্থক্য এখানেই, একজন সন্তানের সুখ সহ্য করতে পারেননা,তাদের নিজেদের স্বার্থ সন্তানের আগে ভাবতো এবং সুলেমানের মা সন্তান যেন কষ্টে না থাকে তা চাহিতেন এবং হুররামকে নিজের সন্তানের মত দেখতেন।
এভাবে আবারও কিছুদিন চলে যায় বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ফিরে, কেনাকাটার করার মধ্য দিয়ে।
এর মধ্যে অনেকবার সুলেমানের বাবা মা ও সুলেমান বলেছিল, হুররামের বাবাকে তাদের বাসায় এসে বেড়াতে তবে তিনি আসতেন না তিনি কঠোর পরিশ্রম একটি হোটেলে চাকরি করতেন সেখানেই ঘুমাতেন এতে করে অসুস্থ হতে থাকে।
সুলেমান অনেকবার বলার পরও সুলেমানদের বাড়িতে আসতেন না নানা অজুহাত দেখিয়ে।
একদিন সুলেমান তার কাজে ভোর বেলায় উঠে বের হয় তারপর হুররাম তার বাবা মায়ের সাথে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আবারও সুলেমানকে ছেড়ে হুররামদের গ্রামের বাড়ি চলে যায়।কারন দেখায় তার বাবা অসুস্থ তাই বাড়ি নিয়ে যাচ্ছে যেখানে গ্রামের মানুষ শহরে চিকিৎসা নিতে আসে সেখানে শহর থেকে চিকিৎসা নিতে যায়।

'পর্ব-৮'-"সুলেমান হুররামের সংসার"
 লেখকঃ মোহাম্মদ শরীফুল ইসলাম শান্ত

অতঃপর রাস্তায় বাসে বসে হুররাম অশ্রুসিক্ত কন্ঠে বলে বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েছে তাই নিয়ে যাচ্ছি আমাদের গ্রামে। তখনও সুলেমানের মনে সংশয় আসলে সত্যিটা কি,যে মেয়েটা তার স্বামী সুলেমান ছাড়া চলতে পারে না সে নাকি তার বাবাকে নিয়ে যাচ্ছে তখন যোগাযোগ করলো যখন কিনা পথিমধ্যে হুররাম সুলেমানকে ছেড়ে যাচ্ছে।
হুররাম গ্রামে যেয়ে পোঁছালো আবারও তার মায়ের কাছে বাসা থেকে সব কিছু সাথে নিয়ে চলে যায় তার মায়ের নিকট তার মা এবারও খুশি যে,সব বের করে নিয়ে আসতে পেরেছে কাউকে না জানিয়ে।
হুররাম বলেছিল সুলেমানকে ও সুলেমানের মায়ের সাথে কথা বলার সময়ও যে তার পরিহিত জামা শুধু সাথে এনেছে সব কিছু তার ব্যাগ ও ড্রয়ারে তালাবন্ধ রয়েছে আর চাবিটা সে সাথে নিয়ে এসেছে। 
একদিন সুলেমান তার সবকিছু পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করতে যেয়ে সে  চাবিটা পেয়ে যায় তখন সে ভাবলো হুররাম তো বলেছিল চাবিটা নিয়ে গেছে তাহলে এখানে আসলো কিভাবে তারপর সব কিছু খোলে এবং দেখে কিছু একটা জিনিসও বাকি নেই সবকিছু নিয়ে গেছে তখন হুররামকে জিজ্ঞাসা করে তখন জানতে পারে যে হুররাম তার খালার সহযোগীতায় সে সুলেমানের বাসগৃহ থেকে সবকিছু চোরের ন্যায় নিতে পূর্ণ সহযোগীতা করে ও হুররামের মা বাবা তা সমর্থন করে,বাবার যে অসুস্থতার কথা বলে সুলেমানের বাসা ত্যাগ করেছিল তা ছিল তার বাবা মায়ের সাজানো একটা নিম্ন শ্রেণীর বুদ্ধিমাত্র।
তখন হুররাম সুলেমানের নিকট বিনয় কন্ঠে বলে যে কাউকে কথাটা না জানাতে সে তার কাছে শ্রীগ্রই চলে আসবে।তার কিছুদিন পর হুররামের বাবা তার কৃতকর্ম ফাঁস হওয়ার ভয় পেয়ে তার মেয়েকে আবার সুলেমানের কাছে দিয়ে যায়।
তখন হুররাম নিজ থেকে নিয়ত করে সে আর তার খালা নামের ডাইনির বাসায় যাবে না যে কি না তাকে খারাপ কাজে বুদ্ধি ও সহযোগীতা করে।
তারপর সব ঠিক করে নিয়েছিল পুনরায় সুলেমান তাদের দুজনের খুনসুটি ভালোবাসা আবারও শুরু হয়ে যায়।তাদের দেখে বোঝা যায় না যে সুলেমানের মনে এতো কষ্ট আর হুররামের মনে তার পরিবারের বিষবাক্য গুলো বৃদ্ধবান।
একদিন হুররামের বাবা মায়ের কৃতকর্মের কথা বলে হুররামকে বোঝতে যেয়ে সুলেমানের হাতে গভীর কামড় দিয়ে বসে তখন অনেক ক্ষত সৃষ্টি হওয়াতে ব্যথায় চটপট করেছিল সুলেমান তখন রাতে ঔষুধের জন্য বের হয়।
তারা প্রায়শই প্রতি রাতের বেলায় দুজনে ঘুরে বেড়াতে পচ্ছন্দ করতো।
রাতের শহরটা ছিল তাদের একান্ত তাদের,রাতে যে কয়টি দোকান খোলা থাকতো বিশেষত তাদের জন্যই কেননা তারা রাতে কিছুনা কিছু ক্রয় করে খায় সাথে অনেকটা সময় ঘুরে বেড়ায়।
তারপরে কিছুদিন পর প্রথমবারের মতন সুলেমানের গ্রামের বাড়িতে হুররাম যায় সেখানে হুররামের অনেক ভালো লাগে সুলেমানের আত্বীয়-স্বজন অনেক আদর যত্ন করে হুররামের এতে হুররাম মুগ্ধ হয়। সেখানেও সুলেমানের কথা মেনে চলতে চাচ্ছিল না হুররাম তখন আগের সবকিছু বিবেচনা করে সহধর্মিণী যেন খারাপ পথে না বাড়ায় তাই তাকে প্রথম তালাক দেয় সুলেমান, সেই রাতে অনেক কাঁদে হুররাম
হুররামের জীবনে অনেক বড় একটা ঘটনা ঘটার পরও সুলেমানের দয়ার মনের কাছে হেরে যায় হুররাম তাই ঢাকায় এসো ক্ষমা চেয়ে আবার সব ঠিক করে নেয়।
কিছুদিন পর সুলেমান তার জীবনের প্রথম সরকারি চাকরি পরিক্ষা দিতে যায় সাথে হুররামকেও নিয়ে যায়,সুলেমানের পরিক্ষাটা অনেক ভালো হয়।তারপর হুররামকে প্রথম বিবাহ বার্ষিকীতে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য অনেক দামি শাড়ি,হিজাব,গহনা,চুড়ি ইত্যাদি ক্রয় করে।
একদিন রাতে সুলেমানের বাবার সাথে শাড়ির ব্লাউজ বানাতে যায় হুররাম, অতঃপর হুররামের শ্বশুর নামাজের উদ্দেশ্যে মসজিদে চলে যায় তখন আসার পথে হুররাম তার খালার বাসায় আবারও প্রবেশ করে নতুন করে কুবুদ্ধির পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য তখন তা সুলেমান দেখে ফেলে তবে হুররাম বারবার মিথ্যা বলতেছিল যে সে যায় নি তার খালার বাসায়, মিথ্যা ছিল অনেক বড় অস্ত্র হুররাম ও তার পরিবারের জন্য তা আবার হুররাম প্রমাণ দিল তারপরের দিন এইসব হুররাম তার খালার মেয়েকে বলে সে তার খালাকে বলে তারপর তার নেশাখোর খালু অকথ্য বাসায় গালিগালাজ করে হুররাম,সুলেমান ও সুলেমানের শাশুড়িকে। এলাকায় খুবই নিম্ন প্রকৃতির নেশাখোর পরিবার হিসাবে ছিল হুররামের খালা খালুর পরিবার তাদের যেমন সম্মান নেই তেমনই সম্মানহানি করতে চেয়েছিল অত্র এলাকায় প্রতিষ্ঠিত সুলেমানের পরিবারকে অতঃপর এলাকার প্রভাবশালী একজন মানুষের পিতার কাছে নেড়ি কুকুরের মতন যেয়ে পায়ে পড়ে সুলেমানের বাবা ও সুলেমানকে ডেকে যেন জিজ্ঞাসা করা হয় সেই ব্যবস্থা করে।
রাতে তার খালু নির্লজ্জর মতন হুররামের শ্বশুর বাড়িতে এসে তার শ্বশুরকে ডেকে সেই প্রভাবশালীদের বাসায় নিয়ে যায়।প্রভাবশালী ব্যক্তির বাবা ছিল সুলেমানের বাবার বন্ধু সুলভ।সেখানে যেতে সুলেমান ও হুররামের নামাজের কারনে বিলম্ব হওয়াতে বলে সে সুলেমান ইচ্ছাকৃতভাবে কথা শুনছে তাদের কি না তার কাছে যেতে বলছে যেন নেতিবাচক ধারনা সৃষ্টি হয় সুলেমানের প্রতি, কিছুটা সময় পর সুলেমান হুরমাকে নিয়ে সেখানে যায় এবং সবায় দরবার শুরু করে তারপর হুররামের খালু ফেঁসে যাচ্ছে দেখে হুররামের মামাকে মোবাইল করে আনায় হুররামের খালা খালু তাদেন সন্তান সাথে মামা মামী তার সন্তান দুই রুমে খুব কষ্টের মাঝে দিন কাটালেও তাদেন মনে ছিল হিংসা নামক এক বিষ যা দিয়ে হুররামের মামা সুলেমানকে বলে উঠে বেয়াদব তখনই প্রভাবশালী ব্যক্তির বাবা তার মামাকে চুপ করিয়ে দেয় কারন তিনি সুলেমান এমন বড় কোনো দোষ করেছিল তা খোঁজে পাননি।তারপর হুররামের মামার মুঠোফোনে হুররামের লালচে মুখে বুকে ওড়নাবিহীন ছবি একটি দিয়ে তাদের বুঝাতে চেষ্টা করে সুলেমান তার ভাগ্নিকে আঘাত করে যা কিনা ছিল অনেক আগের ছবি। তারপর হুররাম যে আগে তেড়েমেড়ে আসে তা জেনে এখানেও হুররামের পরিবার দরবারে পেরে উঠছিলো না সাথে হুররামও সেইদিন সব সত্য বলতেছিল আর মিথ্যা বলানোর চেষ্ঠায় ব্যর্থ হচ্ছিল তার খালু ও মামা।তখন বলে ওদের দেড়ি হয়েছিল নাকি সুলেমান সব শিখিয়ে নিয়ে এসেছে তাই সুলেমানের নামে অভিযোগ নেই। অতঃপর তখন হুররামের মামা ও খালু বলে উঠে হুররাম নাকি সুলেমানের নামে জিডি করেছে তখন হুররামকে জিজ্ঞাসা করা হলে, সে বলে এইসব ব্যাপারে জানে না তারপর তার নিজের আপন খালু মামা তাকে গরু ছাগলের মতন ব্যবহার করতে থাকে এতে এক পর্যায় বলে যে তাকে জোর করে নেওয়া হয়েছিল তখনকার সময় ছিল রমজান মাসের শুরুতে যখন প্রথম একরাত সুলেমান হুররামবিহীন একরাত্রি কাটিয়েছিল সেদিন বিকালে তার বাবা মামা খালু খালার বুদ্ধি ও তাদের নিয়ে থানায় জিডি করে এসেছিল।
তারপর বারবার হুররাম বলতেছিল তার শ্বশুর শাশুড়িকে আপনাদের কোনো দোষ নেই আমায় বাধ্য করে থানায় মিথ্যা বলিয়ে সুলেমানের নামে ও আপনাদের নামে মিথ্যা যৌতুক ও নারী নির্যাতনের জিডি করিয়েছে।তখন সুলেমানের বাবা মনে খুব ব্যথা পায় এবং বলে এই মেয়েকে আমরা রাখবো কি না তা ভেবে দেখবো কেননা তার মাধ্যমে আমার ছেলের নামে জিডি করা হয়েছে।এই কথাটা শোনার পর উপস্থিত তার মামা খালুর মুখে এতক্ষণ যাবৎ মিথ্যা বলার জন্য অপমানিত হওয়ার কালো মুখে যেন রঙিন ছোঁয়া পেয়েছে কারন ডির্ভোস করাতে পারলেই তারা দুজন অনেক বড় অংকের টাকার মালিক হতে পারবে। তবে কিছুক্ষণ পর তার মামা খালু জিজ্ঞসা করে তুই কোথায় যাবি তখন তাদের হাসি মুখে আবার কালোর ছায়া নেমে আসে কেননা আল্লাহ সর্বশেষে ন্যায়কে জয়ী করে তখন হুররাম বলে আমি সুলেমানের সাথে তাদের বাড়িতে যাবো।তখন চরম অপমানবোধ নিয়ে রুম ত্যাগ করে হুররামের দুই আপন আত্বীয় যারা কিনা আপনের নামে হুররামেন ক্ষতি করছে দিনের পর দিন তা আবারও হুররাম বোঝতে পারলো তবে সে তখনও বোঝতে পারেনি তার বাবা মাও এই ষড়যন্ত্রে শামিল। তাই সেই রাতে হুররামের কল রিসিভ করে অনেকবার কল দেওয়ার পর এবং বলে উঠে তুই আমাদের মেয়ে না তোর যা ইচ্ছা তুই করোছ।
তখন কিছুটা সময়ের জন্য আসলেই হুররাম ভাবে সুলেমান ও সুলেমানেন বাবা মা ছাড়া তার আপন ও তার ভালো চায় এমন আর কেউই তার জীবনে অবশিষ্ট নেই।
সেই রাতে হুররাম লজ্জায় কিভাবে তার শ্বশুর শাশুড়িকে মুখ দেখাবে সেটা ভাবাচ্ছিল তখন সুলেমানকে নিয়ে দীর্ঘ রাত বাহিরে থাকে বিভিন্ন খাবার ক্রয় করে এবং হুররাম অনেক অনুতপ্ত হয় ক্ষমা চায় এবং বলে তোমার বাবার মত ফিরানোর জন্য আমার পায়ে যদি পড়তে হয় তাও করবো আর বানোয়াট জিডি আমি উঠিয়ে ফেলবো।
তারপর দুজনে বাসায় যায় এবং সুলেমানের বাবার কাছে ক্ষমা চেয়ে বলে জিডি উঠিয়ে ফেলবে কিছুদিনের ভেতর তার সব ভুলের জন্য অনুতপ্ত হয় যার ফলে সুলেমানের বাবার দয়ার মনে তার বউমার জন্য বিন্দুমাত্র ক্ষোভ না রেখে নিজ আপন মেয়ের চেয়ে বেশি ভেবে কাছে টেনে নেয় এবং পরবর্তীতে যা প্রয়োজন যা খেতে ইচ্ছে করে সব এনে দিতে থাকে আগের মতন করে।
দেখতে দেখতে সুলেমানের বিবাহ বার্ষিকী চলে আসে অনেক ঝাঁকজমক পূর্ণ ভাবে তাদের বিবাহবার্ষিকী অনুষ্ঠিত হয়।
বিবাহ্ বার্ষিকীর পরের দিন আবার সুলেমানের গায়ে হাত তুলে কারনটা ছিল কেন জিডির কথা উঠিয়ে তার পরিবারকে খারাপ বলতেছিল কেন বোঝাচ্ছিল যে তার পরিবার আসলেই হুররামের খারাপ চায়।সেদিনও মুখ চুপ করে পশ্চাৎ অংশে হুররামের ঝাড়ুর অনেক মার খায়। সুলেমান তারপর দ্বিতীয় তালাক দিয়ে দেয়।
তখন সুলেমান হুররাম থেকে দূরে থাকতে শুরু করে।
তারপর কয়েকদিন যাওয়ার পর আবারও অনেক ক্ষমা চেয়ে কেঁদে হুররাম সুলেমানের সাথে সব ঠিক করে নেয়।
হুররাম সাথে সাথে বুঝতে না পারলেও কিছুক্ষণ পর হলেও বুঝতে পারতো যে সুলেমান ছাড়া তার জীবনের কোনো মানে নেই, তাই সেই আবার ফিরে আসতো।
তার কিছুদিন পর সুলেমানের সরকারির চাকরিতে উর্ত্তীণ হয় সেই খুশিতে সবার জন্য খাবার নিয়ে যায় সেদিনই অসুস্থ হয়ে পড়ে সুলেমান।তখন অনেক সেবা করে সুস্থ করে তোলে হুররাম তার কিছুদির পর আরেকটি ক্ষুদে বার্তা আসে যা দেখে সুলেমান কখনই প্রস্তুত ছিল না।

পর্ব ৯ - "সুলেমান হুররামের সংসার" - 
লেখকঃ মোঃশরীফুল ইসলাম শান্ত

পরবর্তীতে সুলেমান তার প্রথম চাকরিটা হুররামের বাবা মায়ের করা জিডির কারনে হারায়।
হুররাম পাশে থেকে সুলেমানকে সান্ত্বনা দেয়,তারপর আরেকটি সরকারি চাকরির পরিক্ষা দেয় সেটিতে সুলেমান অনুত্তীর্ণ হয় এবং পরবর্তীতে হুররাম সুলেমানকে সাথে নিয়ে জিডি উঠাতে যায়।
জিডি উঠানোর সময় দায়িত্বরত এসআই হুররামকে বুঝিয়ে বলে আমরা সবাই সংসার করি আমাদের মাঝেও নানা সময়ে ঝগড়া হয় তাই বলে আমরা থানার দারস্ত হই না যখন একদম কোনো সমাধান পাওয়া যায় না তখন থানায় আসতে হয় নতুবা সংসারে এইসব নিয়ে কোনো না কোনো সময় আবার ঝগড়া সৃষ্টি হবে।
এভাবে হুররামকে বুঝিয়ে জিডি তুলে নেয় দায়িত্বরত পুলিশের এসআই।
আসলেই হুররামের পরিবার কখনই হুররামের হক হুররামকে দিতে চাহিতো না হুররাম যেন কিছু না চায় তার পরিবার থেকে তাই সবসময় চাপ দিতো তার স্বামী থেকে সব নেওয়ার জন্য তারা শুধু জন্ম দিয়েছে সেটাই তাদের অনেক বড় কাজ হিসাবে উপস্থাপন করতো।
হুররামও তার বাবা মাকে অনেক সম্মান করতো তাই তাদের কথা শুনে তার স্বামীর নামে জিডি করে আর পরবর্তীতে স্বামীর গায়ে হাত তুলতো।
হুররাম সুলেমান এভাবে তাদের মাঝে ভালো খারাপের মাঝে ইংরেজি একটি বছর শেষ হয়। 
হুররামকে সুলেমান অনেক সুন্দর সুন্দর জায়গায় প্রতি সপ্তাহে ঘুরতে নিয়ে যেতো একবার আন্তজার্তিক বাণিজ্যমেলায় ঘুরতে নিয়ে যায় তারপর আসার পর রাস্তার মাঝে অনেক সিনক্রিয়েট করে কারনটা ছিল কেন মেয়ে বান্ধবীরা ঘুরতে এসেছিল অতঃপর রাস্তায় সুলেমানকে মারে হুররাম তারপর বলে তাকে ডির্ভোস দিয়ে দিতে কারন তার বাবা মায়ের অবাধ্য হয়ে শুধু সুলেমানকে ভালোবাসতে পারবেনা অর্থাৎ সুলেমানকে মেনে চলতে পারবে না,তারপর কিছুক্ষণ পর রেস্টুরেন্টে খাওয়া দাওয়া করার পর ঠান্ডা হয় তার মন পরে বাসায় ফিরে এসে ঝগড়া করে। সুলেমানের বাবা মা থামাতে চাহিলে তাদেরকে ধমক দিয়ে চুপ করিয়ে দিয়ে বলে আমাদেরটা আমরা বুঝবো।
সুলেমান হুররামকে নতুন বছরে বড় ধরনের সারপ্রাইজ গিফট দক্ষিণ এশিয়ার সবথেকে বড় শপিংমল থেকে দেয় যা ছিল একটি মুঠোফোন। মুঠোফোনটি পেয়ে হুররাম অনেক খুশি হয় এবং আবারও কথা দেয় সুলেমানের অনুগত সারাজীবন থাকবো।হুররাম তার ছোট্ট জীবনে যে সারপ্রাইজ গিফট গুলো পেয়েছে তার তার বিগত বিশ বছরের জীবনে কখনই পাই নাই তাই সবসময় তার অপ্রাপ্তি গুলো সুলেমান দ্বারা মিটিয়ে নিতো।
হুররাম অতঃপর গ্রামে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় তখন সুলেমানের অনুমতি নিয়ে প্রথমবারের মতন গ্রামে যাবে তাই সুলেমান অনুমতি দিয়ে দেয় তারপর হুররামকে আগের জিডির আসলকপিটি হুররাম থেকে চায়, যা ছিলো তার খালুর কাছে সেটা কেউ দিতে চায় না বরং কাগজটা হুররাম নষ্ট করবে বলে সুলেমানের সামনে তাই হুররামের বাবা হুরহুরামকে মোবাইল করে অনেক অকথ্য ভাষায় গালীগালাজ করে এবং হুররামের মা পর্যন্ত অনেক গালিগালাজ করে ও অসুস্থতার অভিনয় করে তাও হুররাম তার দাদার বাসায় মোবাইল করে জানতে পারে।
অতঃপর অনেক সমস্যার পর হুররাম এনেই ছাড়ে জিডির কাগজটি পরের দিন হুররামকে বাসে তুলে দিতে যায় সুলেমান।সুলেমান বাস পূর্ণ গতিতে ছাড়ার আগ পর্যন্ত হুররামের পিছন পিছন যেয়েছিল।
হুররাম সেদিন সুলেমানকে ছেড়ে কিছুদিন একা থাকতে হবে বলে কেঁদে দেয়। বাসের সকলের প্রশংসায় ভাসে হুররাম সুলেমানের এই ভালোবাসা।
তারপর হুররাম গ্রামে যেয়ে পৌঁছায় তারপরের দিন সুলেমান অনেক অসুস্থ হয়ে পড়ে আর হুররামের বাড়িতে তার মা আর দাদি অর্থাৎ তার মায়ের শাশুড়ির সাথে ঝগড়া লাগে এবং হুররামও তার মায়ের পক্ষ নিয়ে ফেরেশতার মতন দাদীকে গালিগালাজ করে।
সুলেমানের সাথে শেয়ার করার পর সুলেমান হুররামকে বুঝায় তবে সুলেমান সব পজেটিভ কথা বার্তা বলায় সুলেমানের উপর অনেক রাগ করে হুররাম
হুররাম চাহিতো সুলেমান ন্যায়ের পক্ষ কথা না বলে তার মায়ের পক্ষে কথা বলে সাপোর্ট যেন দেয় তবে সুলেমান ছিল সব সময় ন্যায়ের পক্ষে।
দেখতে দেখতে অসুস্থ সুলেমান আরো অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং সুলেমানের জন্মদিনের আগে হুররাম সুলেমানের নিকট ফিরে আসে।

পর্ব ১০ "সুলেমান হুররামের সংসার"
লেখকঃ মোঃশরীফুল ইসলাম শান্ত

অতঃপর হুররামকে আনতে সুলেমান বাস স্টান্ডে গেল,তারপর দুজনে বাসায় এসে পোঁছালো।
কিছুদিন পর সুলেমানের জন্য বার্থডে গিফট কিনলো অতঃপর ঝাঁকজমকপূর্ণ ভাবে এভারের জন্মদিন পালন করলো।
তারপরের কিছুদিন পর কিছু না কিছু নিয়ে হুররাম সুলেমানের গায়ে হাত তুলতো সুলেমান কিছুই বলতো না তারপরের থেকে সুলেমানকে মারলে সুলেমান তা প্রতিহত করতো।
তারপরও দুজনে একসাথে মিলে যেত আর অনেক কেনাকাটা ঘুরতো ফিরতো যতক্ষণ না পর্যন্ত আবার হুররাম গায়ে হাত তুলে এবং ক্ষমা চাওয়া আর মারামারি গালিগালাজ করবে না ততক্ষণ পর্যন্ত।
এভাবে কিছুদিন চলে যাওয়ার পর একদিন হুররাম মিথ্যা বলার জন্য সুলেমান রাগ করে তারপর হুররাম সুলেমানকে আবার আঘাত করে এবং সুলেমান তা প্রতিহত করার পর হুররাম বাসা থেকে বের হয়ে গেলে সুলেমান খুব ব্যথা পাওয়াতে দরজা বন্ধ করে থাকে তারপর বাহিরে থেকে হুররাম আসে বাসায় ডুকলেও সুলেমানের রুমে ডুকতে পারে না। তারপর সন্ধ্যার আগে নামাজের কথা ও সুলেমানের মা বলাতে সুলেমান দরজা খুলে অতঃপর সুলেমানের গায়ে হাত তুলে আবার এবং তারপর সুলেমান হুররামকে ধরলে অভিনয় করে হুররাম অনেক চিল্লাচিল্লি করে সুলেমানের বাবা মা ও তার ছোট ভাইকে আনায় তারপর সুলেমানের বাবা সুলেমানকে বেত দিয়ে আঘাত করে, ছোট ভাই ও তার মা গালিগালাজ করে সুলেমানকে।
সুলেমান বাবা তার কোনো ছেলে মেয়ের গায়ে আঘাত করে না,সেদিন সুলেমানের গায়ে হাত তুলে সবাই সুলেমানকেই ভুল বুঝে হুররামের পাশে দাড়ায় সবায়।
সুলেমান একা আনমনে হয়ে চিন্তা করে সমাজে নারীকে অবহেলিত ভেবে সবাই নারীর পাশে থাকলেও পুরুষ সমাজ একা নির্যাতিত দিনের পর দিন হয়েও তাদের পাশে কেউ নেই,শুধু আখিরাতের শেষ দিনের বিচারের অপেক্ষায় দিন কাটাতে হবে সমাজের এই শ্রেণীর পুরুষ সমাজের।

পর্ব ১১ " সুলেমান হুররামের সংসার "
লেখকঃ মোঃশরীফুল ইসলাম শান্ত

হুররাম এমন একজন মানুষ যার কি না নিজস্ব ব্যক্তিসত্তা নেই,
তার বাবা মা তাকে সুলেমানের সাথে বিয়ে দিয়েছিল অনেক কিছু আশা করে তবে তখন হুররাম তেমন রাজি ছিল না কিন্তু এখন যখন হুররাম মানিয়ে নিয়েছিল সুলেমানের সাথে তখন সেই বাবা মায়ের আক্রোশের শিকার হুররাম
হুররামের বাবা চায় না তার মেয়ে সুলেমানের সাথে সংসার করুক,
সরাসরি সুলেমানের বাবাকে মুঠোফোনে জানিয়ে দেয় যে,তাদের মেয়েকে তারা আর দিবে না।
জবরদস্তি করে সুলেমান থেকে কাবিন নামক টাকাসহ নানাভাবে হেনস্ত করার চেষ্ঠা করছে হুররামের মায়ের বুদ্ধিতে তার বাবা।

এক মাস দশ দিন আগে,
সুলেমান হুররাম অনেক সুন্দরভাবে দুজনে ঈদুল ফিতর পালন করলো,
দুজন মিলে অনেক জায়গা ঘুরাঘুরি করলো।
খুব সুন্দর দিন যাচ্ছিল সুলেমান ও হুররাম উভয়ের,
কিছুদিন পর হুররাম গ্রামে যাবে বলে সুলেমানকে জানায়,
সুলেমান হুররামের মনের অবস্থা দেখে পনের দিন ঘুরে আসার শর্তে সুলেমানের নিকট ওয়াদা করে গ্রামে যাওয়ার অনুমতি নেয়।
গ্রামে যাওয়ার প্রতিটি মুহূর্তে রাতে সুলেমান ঘুমাতে পারছিলো না,
তারপর প্রত্যেক রাতে আজ যাবে না বলে সুলেমানকে হুররাম ঘুম পাড়িয়ে দিতো।
এতটায় মধুর সম্পর্ক যাচ্ছিল তাদের যা ছিল অকল্পনীয়।
একদিন সুলেমান হুররামকে যেয়ে বাস স্টান্ডে দিয়ে এলো এবং হুররাম অনেক কান্না করলো যথারীতি আগেরবার যাওয়ার মতন তবে সে ওয়াদা করেছে আগেরবারের মতন পনের দিন পর আবার চলে আসবে, সে তার বাবা মায়ের হাতের পুতুল তাই সুলেমানকে নিতে পারলো না কারন হুররামের মা বাবা তাদের করা অপরাধের অনুশোচনা করে না বরং তাদের মেয়েকে কুপরামর্শ দিতো সংসার নষ্ট করার জন্য।

অতঃপর হুররাম গ্রামে চলে গেল তখন থেকে দুই সপ্তাহ ঠিক ছিল তবে যেদিন হুররামের ঢাকায় আসার কথা ছিল তখন তার বাবা অসুস্থ হয়ে পড়ে তারপর তাকে নিয়ে হসপিটালে নিয়ে যায় এবং তার যত প্রকার সেবা যত্ন আছে সব হুররাম করতে থাকে।
সবকিছু ঠিক ছিল হুররাম মুঠোফোনে সুলেমানকে সময় দেওয়ার মতন সময় ছিল না, পরিবারে মা ছোট বোন কাকা কাকী দাদা দাদী থাকা সত্বেও হুররাম তার বাবার সব কাজ করে দিতো।
যখন সুলেমান খোঁজ নিতো তখনই কল হয়ত রিসিভ করতো না, করলেও মুঠোফোন কলে রেখে অন্য কাজ করতো এবং সুলেমান কিছু বললেই রেগে যেয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতো।

হুররামকে সুলেমান বুঝাতো তারপর সে বুঝতে চাইতো না কারন তার বাবা মায়ের নিষেধ ছিল আর তাদের জামাইকে দেখতে পারতো না তাই তাদের কাছে যেয়ে হুররাম পুরোই পরিবর্তন হয়ে যায় সেই আগের মতন।
সে আগের মতন বাহিরে অবাধে চলাফেরা ভ্রূপ্লাগসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়তে শুরু করে।
তার স্বভাব চরিত্র দেখে সুলেমান তাকে বলে,
নবী (সা.) বলেন, চারটি দোষ যার মধ্যে থাকে সে খাটি মুনাফিক। আর যার মধ্যে উক্ত দোষগুলোর কোন একটি থাকে, তা ত্যাগ না করা পর্যন্ত তার মধ্যে মুনাফেকীর একটি স্বভাব থেকে যায়। যথা- তার কাছে কোন আমানত রাখলে সে তার খেয়ানত করে, সে কথা বললে মিথ্যা বলে, ওয়াদা করলে তা ভঙ্গ করে এবং সে ঝগড়া করলে গালাগালি দেয়। (বুখারী)
অতঃপর হুররামের সাথে মিলিয়ে সে বলে, 
১) তোমার কাছে ছিল আমার সম্মান আমানত তা তোমার বাবা মা আত্বীয়দের কাছে অবনত করছো,
২)তুমি আমার কাছে মিথ্যে বলেছো তুমি ভ্রু প্লাগের পর বাসা থেকে বাহিরে গেছো,
৩)তুমি ওয়াদা করেছিলে ১৫ দিন পর চলে আসবে তবে আমার অসম্মতিতে রয়ে গেছো,বাবা মা মারা গেলেও ওয়াদা ভঙ্গ করার অধিকার ইসলাম কখনই দেই নি তাও স্বামীর কাছে।
৪)তুমি ঝগড়া করলে গালিগালাজ করো।
তুমি চিহ্নিত মুনাফিক,মুনাফিকের জন্য কষ্ট পাওয়া আমার জন্য হারাম হারাম হারাম,
আল্লাহ অবশ্যই ধৈর্যশীলদের উত্তম বিনিময় দান করেন,আমি ধৈর্য ধরবো নিজের সব চাহিদা থেকে আর আল্লাহ কাছে দোয়া করবো আমার কষ্ট লাঘবের জন্য,
আমার বিশ্বাস আমার আল্লাহ আমায় একা রাখবেন না,তিনি তার অনুগত বান্দাদের ভালোবাসেন।
নানান হাদীস থেকে বুঝাতে চেষ্ঠা করে স্বামীর মর্যাদা কতটুকু স্বামীর অবাধ্য হলে সেই নারী সরাসরি জাহান্নামী, রেফারেন্সসহ তাকে শেয়ার করে তবে তার অন্তর তার গাফেল বাবা মায়ের সংস্পর্শে তার হৃদয় গাফেল হয়ে গিয়েছিল।
ভালোর সাথে চললে যেমন একটি খারাপ মানুষ ভালো হয়ে যেতে পারে,
তেমন খারাপের সাথে চললে একজন ভালো মনের মানুষ খারাপ হয়ে যায়।
হুররামের সাথে ঘটে দ্বিতীয়টি যার ফলে সে তার স্বামীর প্রতি খারাপ আচারন করছে।
হুররামের সাথে সুলেমান কথা বলা বন্ধ করে দেয় তবে সুলেমান শুধু খোঁজ নিতো না তবে সব পথ খোলা ছিল হুররামের নিকট কিন্তু হুররাম কখনই সুলেমানের খবর নিতো না।
একদিন সুলেমানের নামে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তার বাবা মায়ের কাছে গীবত করে সুলেমান নাকি নতুন ছাত্রীকে বিয়ে করবে তার সাথে ভালো সম্পর্ক।
তারপর তাতেও তার হয়নি সে সুলেমানের ছোট ভাই ও ভাবীর নিকট নিজের এতো ভালো মনের ধার্মিক স্বামীর নামে গীবত করে।
তারপর এইসব শুনে সুলেমানের মা হুররামের সাথে মুঠোফোনে কথা বলে তারপর অধিকাংশ কথা মিথ্যুকের ন্যায় অস্বীকার করে কেননা মুনাফিক যখন কথা বলে মিথ্যা বলে,ওয়াদা ভঙ্গ করে,আমানতের খেয়ানত করে।
তারপর হুররামের মা সুন্দর করে বুঝিয়ে বলে দুজনকেই, সুলেমানকে যেয়ে নিয়ে আসতে বলে হুররামকে তবে সুলেমান জানতো তাকে আবার অপমানিত করা হবে কেননা সে একবার নয় দুইবার নয় অনেকবার দেখে আসছে হুররামের বাবা মা কেমন তারসাথে তার মামা খালা খালু।
তাই সে আল্লাহ নিকট যে প্রতিজ্ঞা করেছে মুনাফিকের জন্য কষ্ট পাওয়ার তার জন্য হারাম সেই পথেই চলতে থাকে এবং ধৈর্য ধরতে থাকে সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত কুদরতে যেন কেউ তার অশান্ত মনে প্রশান্তি এনে দেয়।
 তারপর একদিন হুররামের বাবার সাথে সুলেমানের কথা হয় তিনি বলেন, "আমার মেয়ে আর পাঠাবো না"।

পর্ব ১২ " সুলেমান হুররামের সংসার "
লেখকঃ মোঃশরীফুল ইসলাম শান্ত


অতঃপর সারা রাত কাঁদার পর হুররাম তার সুলেমানকে গ্রামে আসতে বলে। হুররাম বলে তার বাড়িতে আসতে এখানে তার বাবা কেউ না।
সুলেমান শুধুমাত্র রাগের মাথায় বলেছিল হুররামকে গহনা নিয়ে অন্য ছেলের সাথে বিয়ে করার প্লান চলছে কি না।সেইগুলো নিয়ে এতো বড় ঘটনা হুররামের বাবা কেন ঘটালেন জামাইয়ের সাথে তা পরে জানা যায়।
হুররামের অনেক অনুরোধে সুলেমান অজপাড়া গ্রামে যায় এবং বেশ কিছুদিন ভালোই যাচ্ছিল তবে হুররামের মামা একদিন হুররামদের গ্রামেে বাড়ি আসে সেদিন হুররামের দাদা  সারা গ্রাম ঘুরিয়ে বাসায় আনার পর হুররাম সেখানে থাকে এবং সুলেমানকে তাদের বাড়িতে যেত নিষেধ করে কারন তার মামা এসেছে কুপরামর্শবৃত্রি চলছিল।
তারপর আরেকদিন সুলেমানকে তার শ্বশুর বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে হয় এবং হুররামের মা সুলেমানকে অনেক কথায় শোনায় যে তার বোন এবং বোনের জামাইকে সালাম দিয়ে কথা বলতে যেখানে সুলেমানের বাসগৃহের পাশে হুররামের খালা খালু মামা প্রত্যেকবারের মতন কিছুদিন আগেও সুলেমানকে অপমানিত করতে যেয়ে নিজেরাই ছোট হয় সত্যের নিকট।
সুলেমানের তখনও তার শ্বশুরবাড়িতে ঠাঁই হয়নি তাকে নিয়ে বের হয়ে দীঘির পারে বসে থাকে হুররাম কিছুক্ষণ পর মুঠোফোনে কল আসলে হুররামকে একা রেখে তার আত্বীয়দের সাথে মিলনমেলায় সুলেমানকে একা রেখে চলে যায়।
এভাবে যখন সুলেমানের বাসগৃহ শহরে আসার সময় এলো তখন হৃররাম সুলেমানের সাথে না যাওয়ার অনেক বাহানা শুরু করলো, সেই সময় পর্যন্ত হুররামের দাদা ছাড়া সুলেমানের সেখানে আপন বলতে কেউ ছিল না যে কিনা সুলেমানের কষ্ট এবং আসল সত্য ঘটনা সব জানতো।
তিনি সুলেমানকে সান্ত্বনা দেন এবং হুররাম তার সাথে যাবে নিশ্চয়তা দেন।
অনেককিছুর পর সুলেমানের অজরে কান্না ও সেখানেও তার স্ত্রীর নিকট থেকে মার খাওয়ার পর সেই যাত্রায় ষোড় হাজারের মতন খরচ হয় তারপর সে আর হুররাম শহরে আসে।

শহরে আসার পর সবকিছু ঠিক চলছিলো খুব নিরব ভাবে সুলেমান তার জীবনযাপন করতে শুরু করে, হুররামের যাবতীয় প্রয়োজনীয় সকল কিছু কিনে দিতো আগে থেকেই এখন আরো বেশি দেওয়া শুরু করে।কারন হুররাম সবাইকে সুলেমান তাকে কিছু দেইনা কৃপণ মানুষ বলে সম্বোধন করতো।
একদিন সুলেমানের মা ব্যাগ থেকে কিছু টাকা পাচ্ছিল না তখন সুলেমানের মা হুররামকে দেওয়া গহনা সুলেমান তার কাছে রেখেছিলেন তাও সে পাচ্ছিল না তখন বাসার সবাইকে জিজ্ঞাসা করে কেউ নিয়েছে কি না তখন সবাই বলে কেউ নেয়নি তারপর সুলেমানকে জিজ্ঞাসা করে এবং সুলেমানও বলে সে নেয়নি।
তারপর সুলেমানের ভাবির রুমে যেয়ে যখন জিজ্ঞাসা করছিলো তখন সুলেমানের ভাবি বলে হুররাম তার শ্বশুরবাড়ি থেকে পাওয়া গহনা সে নিয়ে নিবে বলে একাধিক বার তাকে বলেছিল তখন কাউরো বুঝতে অপেক্ষা থাকে না কোনো চোর নয় বরং হুররাম গহনা সরিয়ে সে গতবার গ্রামে যাওয়ার সময় তার সাথে নিয়ে গিয়েছিল তাই সে আসতে চাচ্ছিল না।
আর ওইসব ভিডিও বানিয়ে তার এক্স বয়ফ্রেন্ডকে সম্মোহিত করতেছিল যেন তাকে বিয়ে করে কিন্তু তাতে কোন কাজেই হচ্ছিল না কারন হুররাম ও তার পরিবার কেমন তা সম্পর্ক তাদের এলাকার মোটামুটি সবাই অবগত।
হুররাম সবখান থেকে সব কিছু তার বাবা মায়ের বাড়িতে সরিয়ে রাখতে পচ্ছন্দ করতো।হুররাম তার স্বামীকে অহেতুক কোনো কারন ছাড়ায় নিজ থেকে কারন বের করে সবসময় ঝগড়া করতে চাইতো।
হুররামকে সবসময় খুশি রাখার জন্য সুলেমান অনেক কেনাকাটা করে দিতো তারপরও হুররামের আসল সুখ সুলেমানের নিকট কেন জানি পেত না।
হুররাম যখন অতিরিক্ত করতো গালি গালাজ এবং সুলেমানকে মারধর তখন সুলেমান ছোট্ট কোন গালি যেমনটা ছিল ওয়েটারের মেয়ে এসব গালির ভেতর পরে না শুধু পেশাভিত্তিক পরিচয় তাতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে একদিন গালিটিপে ধরে তখন সুলেমান বমি করে দেয়।
আরেকদিন তাহাজ্জুদ নামাজের সময় রুমে আলো জ্বালায় তখন সুলেমানের পেঠে সজোরে লাথি মারে এতে তার পেঠের ব্যথা সপ্তাহ খানেক থাকে তারপর ডাক্তারের নিকট ঔষুধ খেয়ে রোগ নিরাময় হয়।
যেখানে হুররামের নিজ থেকে সৃষ্টপ্রদত্ত রোগ হলে ডাক্তার পরিক্ষা ঔষুধ ভ্যাকসিন দিয়ে দিতো সেখানে তার আগাতে সে অসুস্থ হয়ে পড়তো।
কিছুদিন পর শরৎকালে তার কাশফুল দেখে যায় তারপর সে রাতে হুররাম অনেক খারাপ আচারণ ও রাস্তায় হাত সজোরে চিমটি দিয়ে অনেক ব্যথা দিচ্ছিলো তখন সবজিওয়ালার মেয়ে বলে রাগে সুলেমান।
সেই দোষে বাসায় আসার পর সুলেমানের মুখে অনেক জোরে একটা ঘুষি দিয়ে বেহুশ করে ফেলে। সুলেমান নিচে পরে যাওয়ার পরও সে অত্যাচার থামায়নি তার পেঠে সজোরে লাথি মারে তারপর তার মাথা খাটের সাথে অনেকবার আঘাত করায় তারপর মেঝেতেও অনেকবার আঘাত করায়, নাকের ভেতর পানি ঢেলে দেয় তখনও বেহুশ একটা মানুষকে উলঙ্গ করে  পালাক্রমে দুই থেকে তিন ঘন্টা পাশবিক নির্যাতন চালায়।
তখন চোখের পানি ফেলা ছাড়া সুলেমানের আর কিছু করার ছিল না কারন সে জানতো এই দেশে নারী নির্যাতন আইন আছে তবে পুরুষ নির্যাতন আইন নেই তাই নিপীড়িত নির্যাতিত হচ্ছে দিনের পর দিন এই দেশের পুরুষ তাদের কথা বলার মতন সোশালিস্টিক মানুষ সমাজে খুবই সংকীর্ণ নেই বললেই চলে পুরুষের মার খাওয়াকে এই দেশে কাপুরুষতা হিসাবেও দেখা হয়।
তারপরও সেদিন সুলেমান চুপ থেকে প্রমান দেয় সে কতটা কষ্ট সেই শুরু থেকে আজ পর্যন্ত সহ্য করে আসছে।

পর্ব ১৩ "সুলেমান হুররামের সংসার'
লেখকঃ মোঃশরীফুল ইসলাম শান্ত

দিনের পর দিন চলে যাচ্ছিল সময়ের সাথে সময়। হঠাৎ একদিন হুররামের দাদা অসুস্থ হয়ে পড়ে তখন হুররাম অনেক কান্না করে এতে সুলেমানের মা অনেক অনুরোধ করে যে হুররামকে যেন গ্রামে নিয়ে যায়।
অতঃপর গ্রামের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে তারপর যেয়ে শুনে শহরে নিয়ে আসতে তার দাদাকে যা সুলেমান আগেই বলেছিল কিন্তু হুররাম তখন শুনেনি।কয়েকদিন থেকে তারা আবার ইট দালানের শহরে ফেরত আসে। সুলেমান হুররামের জীবনে কষ্ট বেদনা সুখের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল। হুররামের দাদাকে শহরে আনা হয় চিকিৎসা করে দেখে জটিল রোগে আক্রান্ত তারপর তার চিকিৎসার যাবতীয় কার্যক্রম চালানো হয় সেখানে নগদ অর্থের প্রয়োজন পড়লে সুলেমান সহযোগীতা হাত বাড়িয়ে দেয় যা দেখে হুররামের মা অসন্তুষ্ট ছিল।
এতে করে সুলেমানের টাকা তার চাচা না নিয়ে হুররামের দাদার টাকা শহরে আনার ব্যবস্থা করে।
অতঃপর সফলভাবে অপারেশন হয় এবং তিনি সুস্থ হয়ে উঠেন।
তার শহর ছেড়ে গ্রামে যাওয়ার সময় হুররাম গ্রামে যেতে চায় কিন্তু সুলেমান চাচ্ছিল না হুররাম একা থাকুক তাকে ছাড়া।
হুররাম ও সুলেমানের ভেতর মৌন চুক্তি হয় যে হুররাম আর সুলেমান এক রাত দুজন আলাদা থাকলে তাদের তৃতীয় তালাক অর্থাৎ ডির্ভোস হয়ে যাবে।তাই সুলেমান বুঝিয়ে শুনিয়ে পরবর্তীতে নিয়ে যাবে বলে জানায়।
তারপর হুররামকে নিয়ে সুলেমান গ্রামে যায়, দাদাকে দেখে ঘুরে ফিরে দিন যায়।
তারপর যখন শহরে আসার সময় হয় তখন হুররাম শহরে আসতে চাচ্ছিল না তখন আবার হুররামকে কোন এক অজানা টান আকড়ে রাখছিলো গ্রামে এতে সুলেমান অসন্তোষ হয়।হুররামকে শহরে তার সাথে চলে আসার জন্য বলে কিন্তু হুররাম কোনো মতেই রাজি হচ্ছিল না।
সুলেমান সারা দিন রাত না খেয়ে হুররামের জন্য বাস স্টান্ডে অপেক্ষা করে কিন্তু হুররাম আসে না।তারপর রাত যখন গভীর হুররাম এসে খারাপ ব্যবহার করে চলে যায়।
তারপর হুররামের বাবা আর হুররাম নিতে এলে সুলেমান বাসায় যায় এবং বলে হুররামকে শেষ বাসে শহরে যেতে কিন্তু হুররামদের গ্রামে বাড়িতে এসে বিপত্তি দেখা দেয়।
সুলেমানকে হুররামের মা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে যা একজন জামাইকে তার অবর্তমানেও এমন গালি দেয় যা সুলেমানের জানা ছিল না।
হুররামের বাবা তখন শহরের ওয়েটারের পেশা ছেড়ে গ্রামের একটা হোটেলে ওয়াটার ও রুটি বানানোর কাজ নিয়ে ছিল সাথে হুররামের গহনা বিক্রয়ের টাকা সুদে লাগিয়েছিল লাভবান হওয়ার জন্য।
তার থেকে সুলেমান আর কি আশা করে সেও শুরু করে হুররামের মায়ের সাথে অশিক্ষিত বর্বরের ন্যায়।
শুধু সুলেমানের বড় চাচা আশাতে সেই সময় সবকিছু শান্ত হয় নতুবা সেদিন ডির্ভোস হয়ে যেত।
তারপর কিছুদিন পর হুররাম শহরে আসবে বলে জানায়, তার শহরে না আসার পিছনে একটা কারন থাকে হুররামে বাবা মায়ের অবহেলায় তার ছোট বোন সরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারছিলো না।
হুররামের ছোট বোনকে ভর্তি করায় এবং তার পরের দিন শহরে যাবে বলে মন ব্রত করে।
অতঃপর শহরে আসার পর তাদের খুনসুটি জীবন সুন্দর যাচ্ছিল।
সুলেমান হুররামকে বিশেষ বিশেষ দিন গুলোতে বিভিন্ন সারপ্রাইজ দিতে থাকে যা ছিল অমূল্য।
তবে একটা দিক সুলেমান লক্ষ্য করে মুঠোফোন সুলেমানের কাছ থেকে দূরে রাখে হুররাম
তারপর একদিন সুলেমান হাতে নাতে ধরে গোসলখানায় সে মুঠোফোন নিয়ে যায়,সে সময় মুঠোফোন দেখতে চাহিলে দেখায় না।
তারপর একদিন রাতে তাকে একটা বহুল জনপ্রিয় এপস এ কিছু ভিডিও তৈরি করা দেখে তার সৎ উত্তর হুররাম দিতে পারেনি।
তখন দুই এ দুই চার হয়, সুলেমান বুঝতে পারে যে তার সহধর্মিণী এখনও ঠিক হয়নি।
তারপর তার মোবাইল সুলেমান বাজেয়াপ্ত করতে চাহিলে সে অস্বীকৃতি জানায় এবং সুলেমান নিতে গেলে তার মাথার উপর পা দিয়ে চেপে ধরে এবং গায়ে হাত তুলে।
তারপর সে ডির্ভোস দেওয়ার জন্য সুলেমানকে বলে এবং গ্রামে যাওয়ার জন্য ব্যাগ গুছিয়ে রাখে।যদি সে গ্রামে চলে যায় এবার তাদের ডির্ভোস নিশ্চিত।

পর্ব ১৪ "" সুলেমান হুররামের সংসার ''
মোঃশরীফুল ইসলাম শান্ত

অতঃপর সময়ের ব্যবধানে সুলেমান হুররামের সংসার কয়েক মাস অতিবাহিত হয়।এই সময়ে সুলেমানকে হুররাম অনেক বড় একটা সারপ্রাইজ গিফট দিবে বলে লোভ দেখাতো।
সুলেমানের মনেও আগ্রহ সৃষ্টি তার সহধর্মিণী থেকে বড় উপহার পাবে। চলে আসলো সুলেমানের জন্মদিন কিন্তু সে তার কথা রাখলো না নানা ভাবে সুলেমানকে লোভ দেখাতে লাগলো, 
সুলেমানের জন্মদিনটা বেশ ভালোই হয়েছিল।
তারপর সময়ের গতিতে সময় চলতে লাগলো। এসে পড়লো মাহে রামাদান, এই রামাদান মাসে হুররাম তার জীবনের সবচেয়ে খারাপ কাজ গুলো বিগত সময়ে করেছে এর ব্যতিক্রম এবারও নয়।
হুররাম রোজায় সুলেমানের গায়ে হাত তুলে তারপর তার বিনিময়ে হুররাম সুলেমানকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে খাওয়াতে নিয়ে যায়।এভাবে গায়ে হাত তোলা ও গালিগালাজের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল দিন।
একদিন সুলেমানের মায়ের একটা গহনা হারিয়ে যায় সেটা খোঁজে পাচ্ছিল না তখন হুররাম এসে সুলেমানকে বলে তুমি নিয়েছো কি না। তখন সুলেমান বলে আমি নেই নাই, আমি স্বর্ণ দিয়ে কি করবো।কিন্তু হুররাম বারবার প্রশ্ন করতেছিল এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সুলেমান বলে তুমি আগে যে বিয়ের সময়ের স্বর্ণ নিজের গ্রামে রেখে এসেছিলে এবারও তুমি নিয়েছ আমায় এতো প্রশ্ন করছো কেন। এতে হুররাম অনেক কষ্ট পাওয়ার অভিনয় করে এবং সেদিন রাতে সে গ্রামে চলে যাবে বলে মন ব্রত করে। 
সেদিন ঝামেলার কারণে সুলেমান তারাবীর নামাজ পড়তে যেতে পারে না।
তারপর হুররাম বাসা থেকে বের হয়ে যায় সে মুঠোফোনে ইন্টারনেট সংযোগ দিয়ে তার ফেইক সোশ্যাল মিডিয়া আইডি থেকে তার প্রেমিক নিশাতের সাথে যোগাযোগ করে যে সে গ্রামে আসছে এবং তার সেই খালার সাথে তারপর বাবা মায়ের সাথে কথা বলে যখন সে বাসে উঠবে তার কিছুক্ষণ আগে সুলেমান বাস স্টান্ডে যেয়ে হাজির। 
হুররাম তখন টিকিট কিনে ফেলেছিল, বাস যখন আসলো তখন বাসের সুপারভাইজারকে বললো হুররাম গ্রামে যাবে না বাসকে সেখান থেকে  তারপর চলে গেলো।তারপর হুররামকে সুলেমান বাসের টিকিটের হাজার টাকা পরিশোধ করে যেন সে নিরব হয়।তারপর বাহিরে খাওয়ানোর পর রাতের অনেক সময় বাহিরে কাটিয়ে দেয় তারা দু'জন।
রাতের সময়ে রিকশাতে ঘুরে একটা শপিং মলে যায় তারা এবং সেখান থেকে আসতে চাচ্ছিল না হুররাম সে গ্রামেই যাবে বলে মনব্রত করে কেননা সে সবাইকে বলে ফেলেছে যে সে আসছে। 
বিশেষ করে সুলেমান তার সাথে গ্রামে গেলে একান্তে তার প্রেমিকের সাথে কথা ও দেখা করতে পারবে না।
হুররাম সুলেমানকে বলে নিশাত অনেক ভালো ছিল কেয়ারিং ছিল আরও কত কি তখন সুলেমানের কলিজাটা ফেটে যাচ্ছিল।
অতঃপর সুলেমান অনেক বুঝিয়ে শুনিয়ে অনেক কিছু কেনাকাটা করে দিবে এবং ঈদের বন্ধে গ্রামে নিয়ে যাবে বলে সেখানে রাস্তায় অজরে কান্না করে সুলেমান এত অপমান লাঞ্ছনা পরও সে হুররামকে ভালোবাসে তারপর বাসায় নিয়ে আসলো কারন রোজা রাখতে হবে।
কিছুদিন চলে গেল এভাবে তারপর হুররামকে নিয়ে দামী দামী জিনিসপত্র কেনাকাটা করে দিল। 
সুলেমানের তারাবীর নামাজ যেদিন শেষ হবে সেদিন সুলেমানের পায়ে অস্ত্রপাচার হলো।তারপরও সে কথা দিয়েছিল,আর সুলেমান এই পর্যন্ত যত কথা দিয়েছে একটিও ভাঙ্গে নাই পক্ষান্তরে বেশিরভাগ সময় হুররাম মিথ্যা প্রতারণা করে সুলেমানকে ঠকিয়েছে।
কথা যেহেতু দিয়েছিল তাই পরেরদিন কাঁচা সেলাই থাকা অবস্থায় গ্রামে নিয়ে গেল হুররামকে।
গ্রামে দুইজন গেল এবং সুন্দরভাবে ঈদ পালন করলো। 
সুলেমান যখন উপরে থাকতো তখন হুররাম তার অতীত প্রেমিক ও বর্তমান পরকিয়া প্রেমিকের সাথে হুররামের মায়ের মোবাইল দিয়ে যোগাযোগ অব্যহত রাখতো। 
তারপর তার নানা বাড়ির কাছে একটা দূর সম্পর্কের মামার বিয়ে ছিল সেখানে যেন সুলেমান যায় তাই হুররাম বললো তুমি যদি যাও আমার সাথে সেখানে তাহলে আমি ১ বছর আর গ্রামে আসবো না।
এতো বড় শর্ত দেওয়ার কারন সেখানে তার নানা শ্বশুর বাড়ির দুশমনেরা খালা খালু মামা  উপস্থিত থাকবে যারা বিয়ের পর অনেক চেষ্টা করেছিল সুলেমানকে অপমানিত করার এবং হুররামেন হারাম সম্পর্ক গুলোর সবথেকে বড় সহায়ক তার খালা।
সুলেমান জানতো গ্রামে এখানে তার পরকিয়া প্রেমিক থাকে তাই ১ বছর না আসলে সে প্রেমিককে ভুলে যাবে তাই রাজি হয়ে গেল শর্তে সে তার অপমানের কথা সাময়িক সময়ে ভুলে যাওয়ার মন ব্রত করলো।
তারপর বিয়েতে অনেক উচ্চ শব্দে গান বাজনা বেহায়াপনা চলতে লাগলো, সুলেমান যা দেখে অস্বস্তিতে পড়ে গেল। 
হুররাম তার খালার সাথে নাচতে শুরু করলো যেখানে নন-মারহাম অনেক পুরুষ উপস্থিত ছিল। তারপর সুলেমান ডাক দিলে চলে আসে তারপর রাত যত গহীন হয় তাদের নাচ গান বাড়তে থাকলো। হুররাম যেন গানের নন-মারহামের মাঝে না নাচে তাই সেখানে বসে থাকলো তখন তার এক মামা তাকে ডেকে ভেতরে নিয়ে যেতে চায় তারপর সুলেমান চলে আসে এবং দেখে হুররাম তার খালা বোন এদের নিয়ে নন-মারহাম পুরুষদেন সামনে নাচতেছে তারপর আরেকজন মহিলা এসে উঠে যেতে বললো সুলেমানকে।তারপর সুলেমান উঠে যেয়ে একটু আড়ালে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া শুরু করলো।
কিছুক্ষণ পর হুররাম নাচ গান শেষ করে হুররামের গায়ে হাত তুলে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া অবস্থায়।
তাহাজ্জুদ নামাজ হুররামের হাতে এতো মার খাওয়ার পরও সে নামাজ ছাড়লো না। তারপর ক্ষমা চেয়ে সুলেমানকে নিয়ে ঘুমাতে গেল,এমন জায়গাতে ঘুমাতে হলো সেখানে সব নন-মারহাম পুরুষ চারপাশে তারপর পর্দা করে শুয়ে পড়ে।
তারপর ফজরের সময় নামাজ আদায় করে ঘুমায় সুলেমান ও হুররাম তবে সকালে আবার বাজানো শুরু করে সেই আযাব গানবাজনা।
তারপর খাওয়া দাওয়া করে হুররামদের গ্রামের ঘরে আসে সুলেমান।
তখন তার মা বাবা সেখানে থাকবে বলে আর আসে না হঠাৎ করে কি মনে করে সুলেমান হুররামের পিছনে তারা চলে আসলো।
তারপর হুররামের আরেক মামার বাড়িতে দাওয়াত খেতে যায়,
তা ছিল হুররামেন প্রেমিক নিশাতের বাড়ির রাস্তা দিয়ে যেতে হয়।সেখানে খাওয়া শেষে আশার পর তার খালা দেখিয়ে দিচ্ছিল হাত দিয়ে নিশাতেের বাড়ি দিকে যেতে যা দেখে সুলেমান অনেক কষ্ট পায়। তারপর একদিন হুররামের আপন মামার ডির্ভোস হবে যে মা শেষ একটি শালিসে অনেক খুশি হয়েছিল যখন সুলেমানের বাবাকে অনেক জোড়াজুড়ি ও সুলেমানের নামে জিডি করেছে তা জানার পর হুররামকে ছেড়ে দিবে কি না সুলেমান তা ভেবে দেখবে এই কথাটা শোনার পর।
যা জানার পর সুলেমান রবের কাছে বলে উঠে প্রকৃতি আসলেই এমনই আপনি যার ক্ষতি করেছেন আজ নয়ত কাল সেই ক্ষতিটা আপনারই হবে এবং সেটা আল্লাহ করবেন।
তারপর যখন হুররাম তার মা'কে নিয়ে সেই ডির্ভোসের শালিসিতে যায় তখন হুররামের মায়ের মোবাইল তার বোনের নিকট বাসায় ছিল।
যা পেয়ে সুলেমান দেখে ফেইক একটি এ্যাকাউন্ট দিয়ে সে তার পরকিয়া প্রেমিক নিশাতের সাথে যোগাযোগ রাখছে এবং সেই এ্যাকাউন্টের দুইটা ফ্রেন্ড একটা হুররামের খালা অন্যটি নিশাত।

তারপর হুররামকে এইসব জিজ্ঞাসা করে কিন্তু স্বীকার করতে চায় না তারপর একটা সময়ে স্বীকার করে।সুলেমান তখন রবের নিকট সিজদায় অজরে কান্না করে কিন্তু এতে বিন্দুমাত্র খারাপ কাজ যে করছে হুররাম তার কোনো অনুতপ্তবোধ ছিল না।
তারপর ঢাকায় আসলে আরো অনেক দামী জামাকাপড় কিনে দিবে বলে সুলেমান তারপর সেই লোভ দেখিয়ে শহরে আনে।
তারপর শহরে এসে নামাজ পড়তে চাচ্ছিল না, নামাজের জন্য ডাক দিলে গালিগালাজ করতো তাই সুলেমান হুররামকে বলেছিল তোমার বংশ পরিচয় নেই বলে তোমার কোনো ব্যক্তিত্ব লজ্জাবোধ নেই স্বামীর কথা অবাধ্য হয়ে এইসব করো কিছুই শিক্ষা দেয়নি।
তখন হুররাম অনেক কষ্ট পাওয়ার অভিনয় শুরু করে।
তারপর হুররামকে অনেক কেনাকাটা করে দেয় সেই গ্রামে দিয়ে আসা কথা রাখার জন্য।
ইতোমধ্যো হুররামদের লুকানো আরেকটি সত্য প্রকাশিত হয়ে গিয়েছিল সুলেমানেন সামনে হুররামের বাবার বাবা যাকে দাদা বলে ডাকে তিনি নয়। সুলেমান দাদা শ্বশুর বাড়ীর মানুষদের সাথে কোনোভাবেই হুররামের বাবা বা হুররামের স্বভাবের মিল খোঁজে পাচ্ছিল না, দাদা শ্বশুর বাড়ির মানুষেরা ছিল মাটির মানুষ।
তারপর সুলেমান জানতে পারে যে হুররামের বাবা ছোট বেলায় বর্তমান দাদার নিকট এসে কাঁদছিল তারপর তাকে আশ্রয় দেয়, 
হুররামের বাবাতে খোঁজতে কেউ আসেনি হয়ত দেখা যাবে তাদের বাবা মায়ের সম্পর্ক ভালো ছিল না অথবা অন্যকিছু নয়ত কেউ নিজের সন্তান হারানোর পর চুপ হয়ে বসে থাকে না।
এইসব যখন সুলেমান জানতে পারে তখন অনেক কষ্ট পায় এবং হুররামের বাবার জন্য অনেক কিছু করবেন বলে মন ব্রত করে কিন্তু হুররামের পরিবারের মানুষেরা তা পাওয়ার যোগ্য ছিল না তারা তাদের মেয়েকে কখনই শাসন করতো না স্বামীর সাথে এমন আচরণ করতো সব কিছু জানার পরও।
এইসবের পর হুররাম একটা সুযোগ বুঝে যখন সুলেমানের বাসা থেকে তারপর সব দামী দামী জিনিসপত্র নিয়ে গ্রামে চলে যায়।
এতে সুলেমান অনেক বুঝিয়ে বলে সেই সময় তার বংশ পরিচয় নেই বলে তার আচরণ ও চরিত্র সেই রকমের হয়েছে এইসব বলার জন্য ক্ষমা চায় কিন্তু তারপরও সে আসে না। 
তখন সুলেমান বলে রাতে দুজন একসাথে না থাকলে তালাক হয়ে যাবে কিন্তু কোনো মতেই হুররাম আর ফিরে আসেনি।
হুররামকে একদিন অনেক বুঝিয়েছিল তারপর রাতের পর সকাল হয় তারপর আর যোগাযোগ রাখেনি সুলেমান।
তারপর দেখা যায় হুররাম অনেক সোশ্যাল সাইটে নিজেকে প্রদর্শন করা শুরু করে এবং তার প্রেমিকের সাথে যোগাযোগ দেখা হতে থাকে।

পর্ব - ১৫ "সুলেমান হুররামের সংসার''

লেখকঃ মোহাম্মদ শরীফুল ইসলাম শান্ত

এভাবে কিছুদিন যায় তারপর চলে আসে মুসলিম ধর্মের সবচেয়ে বড় উৎসব কুরবানির ঈদ।

তখন সুলেমানকে হুররাম বিভিন্ন আশা দেখায় যে সে ফিরে আসবে এবং ছেলের সাথে আর কথা বলবে না কিন্তু সে শহরে আসে না।

হুররাম সুলেমানকে বাধ্য করে তার বাবাকে মুঠোফোনে যেন যোগাযোগ করে এবং ক্ষমা চায় এবং গ্রামে ঈদ করতে যাবে তা বলতে।

সুলেমান যথারীতি মুঠোফোনে জানায় বুঝিয়ে বলে এবং ক্ষমা প্রার্থনা করে।

হুররামেে বাবা সবকিছু মেনে নেয় এবং আসতে বলে ঈদ সেখানে করতে বলে।

কিছুক্ষণ পর হুররামের বাবা ঘরে ফিরে আসে তখন অনুমতি দিয়েছে কেন তাই হুররামের মা বাবা কে বকাবকি করে মুঠোফোনে কল দিতে বাধ্য করে।

তারপর সুলেমান শুনতে পায় পাশে থেকে গালিগালাজ করছে হুররামের মমতাময়ী মা।

হুররামের বাবা অজপাড়া গ্রামে আসতে মানা করে এবং সুলেমান অনেক কষ্ট পায়।

হুররামের কাছে সবকিছু খুলে বলে তারপরও সুলেমানকে হুররাম আসতে বলে। তার খায়েশ পূর্ণ হয় কেননা সুলেমান ভুল না থাকার সত্বেও ক্ষমা চাওয়ানোর মাধ্যমে প্রশান্তি পেয়েছে।

তারপর অজপাড়া গ্রামে যাওয়ার সময় আসে তুমুল বৃষ্টি হচ্ছিল হুররাম তাকে নিতে আসে।

বাসায় সবাই ঘুমে ছিল হুররাম একা এসেছে আগে দাদাও আসতো এবার আসেনি।

সুলেমানের হাতে অনেক কিছু ছিল, শ্বশুরবাড়িতে কখনই খালি হাতে যায়নি,দুই হাতে খরচ করতো কিন্তু মানুষকে কেউ জানাতো না শুধু খারাপটাই সবার সাথে আলোচনা করতো।

অতঃপর সবাই ঘুমে ছিল হুররাম পিছনের দরজা দিয়ে ঘরে প্রবেশ করে সামনে এসে দরজা খোলে সুলেমানকে ঘরে প্রবেশ করায়।

সেদিন হুররামের মুঠোফোন হাতে নিয়ে তার সবকিছু পেয়ে যায়।

সুলেমান দেখে তার আরেক প্রাক্তন নয়নের সাথে কথা বলেছিল।

এছাড়াও আরো ছেলেদের সাথে কথা বলেছিল সব পেয়েও কিছু বলে না শুধু জিজ্ঞাসা করে এবং পরবর্তীতে ধরা খেয়ে যাওয়াতে সব স্বীকার করে নেয়। অতঃপর সুলেমানের হাতে সিম টি দেয় তারপর সে স্ত্রীর চরিত্রহীনতার অংশবিশেষ লোপাট করার উদ্দেশ্যে সিম ভেঙে ফেলে দেয়।

এভাবে চলতে থাকে কিছুদিন হুররামের কুরবানি ঈদ ভালো মতন যায়, যেখানে সুলেমান উক্ত বছরে দুই ঈদ তার শ্বশুরবাড়িতে হুররামর মুখে হাসি ফোটাতে করে।

তারপর সুলেমানকে একদম সুযোগ বুঝে আবারও অকথ্য ভাষা গালিগালাজ আজেবাজে কথা শুনায় হুররামের মা।

তাদের ভাষ্যমতে আমাদের মেয়ে খারাপ, মেয়েকে ডির্ভোস দিয়ে যেন দেই।

তারা হারাম সম্পর্কের সবকিছু জানে তবুও মেয়ে অবাধে রাস্তায় যেতে দেয় কোনো মানা করে না।

এতোকিছুর পর ধৈর্য ধরে সুলেমান কিছু না বলে মসজিদে চলে যায়।

মসজিদে থাকা অবস্থা হুররাম তার কাছে যেয়ে সান্তনা দেয়।

তারপর না খেয়ে ছিল খেতে বলে এবং ঘরে নিয়ে আসে।

হুররামকে এক রাতে নছিয়ত করার সময় এবং বাচ্চা নিবে বলায় সুলেমানের মুঠোফোন দিয়ে তার গায়ে মার দেয় এবং মোবাইলে অংশবিশেষ ভেঙেই যায়।

তখন সুলেমান রাগের মাথায় বলে উপরের সব কিছু বিক্রয় করিলে মুঠোফোনের মূল্য হবে না।

সেই সময়কালে একেবারে ডির্ভোস হয়ে যায় হুররামের আপন মামা মামীর।

হুররাম পরবর্তীতে সুলেমানকে শহরে যেতে বলে,

হসে পরে আসবে কিন্তু সুলেমান তাতে রাজি হয় না।

হুররাম কিছু শর্ত দেয় সে যা করলে ঢাকায় আসবে, ১)শহর থেকে গ্রামে যা নিয়েছে তা কিছু নিবে না,

২)ঢাকায় যে কোনো কাজ করবে না বসে বসে খাওয়াতে হবে,

৩)স্বর্নের গহনা গিফট দিতে হবে জন্মদিনে,

৪)সুলেমানের বাবার নিজস্ব বাড়িতে ছেড়ে ভাড়া বাড়িতে উঠার শর্তে,

সুলেমান হাসি মুখে সব মানে কেননা তার অর্ধাঙ্গিনী তার পাশে থাকবে তাতেই তার শান্তি এবং পাপের গ্রাম থেকে অনেক দূর থাকবে।

হুররামকে নিয়ে শহরে যায় সুলেমান সেইবারও সুলেমান অনেক আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

আসার পর তাদের দিন ভালোই যাচ্ছিল কারন আবারও অনেক কেনাকাটা করে দিয়েছিল স্বর্ণের গহনা থেকে শুরু করে আরো অনেক কিছু তারপর তারা অনেক ভালো সময় পার করে।

ধুমধাম করে হুররামের পৃথিবীতে আসার দিনটাও পালন করে।

হুররাম কিছুদিন পর অসুস্থ অনুভব করে, তার ডাক্তার দেখায় এবং রক্ত পরিক্ষায় কোনো রোগ পাইনি।

কিছুদিন পর তাদের সুখবর আছে যে সুলেমান হুররামের সংসারে ফুটফুটে সন্তান আসতে চলেছে।

এতে তারা দুইজনেই অনেক খুশি হয়।

সুলেমান এবার গ্রাম থেকে আশার পর কোনো কাজেই হাত দিতে দেইনি কারন তার এই কথা দিয়ে আনতে হয়েছিল।

সুলেমান বরাবরের মতন তার কথা রাখলেও আবারও ছলনার আশ্রয় নেয় হুররাম সে না বলে গ্রামের উদ্দেশ্যে যাওয়ার জন্য রওনা হয় তখও সে জানতো না আসলে গ্রামে যাওয়ার জন্য টাকা পাঠায় কে?

তারপর রাস্তায় যেয়ে হুররামকে ধরে যে সে যা এবার কিনে দিয়েছে তা নিয়ে চলে যাচ্ছে।

তারপর আটকায় এবং পনের দিন থাকবে সেই শর্তে অনুমতি দেয় সুলেমান হুররামকে গ্রামে যেয়ে থাকার জন্য।

কিন্তু গ্রামে যেয়ে পনের দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও আর আসে না,

সেখানে বসে অকথ্য ভাষা সুলেমানকে গালিগালাজ করতো যখন সুলেমান হুররামকে বেপর্দা থাকতে বারং করতো ইসলামি অনুশাসনের কথা বলতো।

সুলেমান সবসময় চাইতো সে শহরের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ালেখা করুক কিন্তু ভর্তির মৌসুমে হুররাম গ্রামে যেয়ে থাকতো তাই ভর্তি করানো সম্ভব হয়নি।

কিন্তু হুররাম সেই কলেজে ভর্তি হয় যেখান থেকে সে অতীতে সব অপকর্মে লিপ্ত ছিল।

সেই কলেজের পাশেই তার প্রাক্তন নিশাতের বাসা এবং বিগত সময়ে প্রায়শ সেই বাসায় যাওয়া আসা করতো তা মোটামুটি হুররামের গ্রামবাসী ও নিকট আত্বীয় জানতো,

সুলেমানের গোপনে বিশ্বাসঘাতকতা ও ছলনার আশ্রয় নিয়ে সেই কলেজে ভর্তির জন্য আবেদন করে যাতে খুব কাছে থাকতে পারে সেই ছেলেটির যার আড্ডার কেন্দ্রস্থল ছিল উক্ত কলেজ।

সুলেমান তার নেটওয়ার্ক মাধ্যমে জানার পর ভেঙে পড়ে এবং রবের নিকট দুই হাত তুলে বলে কখনই কি হেদায়েত পাবে না আমার সহধর্মিণী। 

সে আরো বলে বিয়ের আগে অবৈধ শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত ছিল এবং বিয়ের পর যখন সুলেমান চাচ্ছিল ইসলামের পথে চলুক তখনই সেই ছেলের তার পাশাপাশি থাকার বন্দবস্ত করলো,হে রব আপনি এদের হেদায়েত দান করুন।

অতঃপর একদিন দূর সম্পর্কের সেই নানার বাড়ির একটা সমস্যা শুনে সুলেমানের কষ্ট লাগে এবং সে চেষ্টা করে সমস্যা ঠিক করে দেওয়ার যাতে রূপা ও রুপমের সংসার ভেঙে না যায় কিন্তু হুররামের দূর সম্পর্কের নানার মেয়ে রূপা খালাকে উসকিয়ে দিতো যেন ডির্ভোস দিয়ে দেয়।

এরই পাশাপাশি হুররামের মা, আপন ছোট খালা - যে জানতো হুররামের সাথে নিশাতে বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্কেও মিলিত হয়েছিল এবং বিয়ের পরেও একই সাথে বহুবার কথা বলেছে তার তত্বাবধানে,তার সে ছোট খালা আরো অনেককেই বলে বেড়াতো হুররামের বিয়ের আগের অতীত চরিত্র নিয়ে যা কিনা ছিল হুররামের সামনে ভালো সেজে খারাপ কাজের সহযোগিতা করে আবার অন্যদের বলে বেড়াতো। তারাই বলতো তুমি সংসার ভেঙে ফেলো তোমার জন্য আরো ভালো ছেলে আছে কোনো সমস্যা নেই।

কিন্তু রূপা ও তার পরিবার এইসবে কান দিতো না,

বরং আশায় থাকতো সুলেমান রূপমের সাথে কথা বলে সব ঠিক করে দিবে।

রূপার পরিবার ছিল অনেক বেশি ভালো, আগের রমজানের ঈদের পর গান বাজনার সেই বিয়ে বাড়িতে সুলেমানের স্ত্রী হুররামকে নাচানোর জন্য কষ্ট পেয়েছিল তা যে শুধু সে ছোট খালা খাদিজার জন্য হয়েছে তা নিশ্চিত হয়ে যায়।

রূপার পরিবার আসলেই অনেক ভালো ছিল তারা কখনই সত্য কে মিথ্যা ও মিথ্যা কে সত্য বলতো না।

ভালোকে ভালো এবং খারাপকে খারাপই বলতো।

শুধু রূপমের মতন দুশ্চরিত্রে জামাই রূপার কপালে পড়ে তাদের আজ অনেক কষ্টের দিন অতিবাহিত করতে হচ্ছিল।

যখন হুররাম জানতে পারে সুলেমান রূপা রূপমের সংসার ঠিক করে ফেলছে তখন সে আবারও সুলেমানের নামে চিকন মাথার বুদ্ধি ব্যবহার শুরু করে যেন সবাই সুলেমানকে অপচ্ছন্দ করে।

কিন্তু রূপার পরিবার সুলেমানকে ভুল বুঝে না কারন তারা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া একটা পরিবার ছিল যারা দ্বীনের পথে চলার চেষ্টা করতো।

হুররাম সবাইকে মুঠোফোনে সমস্যা লাগানো শুরু করে এবং রূপমকেও মুঠোফোনে সুলেমানের সাথে কথা বলতে মানা করে দেয় ।

সুলেমানকে হুকমি দেয় বাচ্চা নষ্ট করে ফেলবে সংসার ঠিক করাতে সহযোগিতা করলে...


পর্ব ১৬ আসিতেছে



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন